করোনা আতঙ্কে ওসমানীনগরে দ্রব্যে মূল্যে আগুন

প্রকাশিত: ৫:২৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২০

করোনা আতঙ্কে ওসমানীনগরে দ্রব্যে মূল্যে আগুন

অন্তরা চক্রবর্তীঃঃ

করোনা আতঙ্কে সিলেটের ওসমানীনগরে হু হু করে বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। করোনার কারণে দেশব্যাপি কড়া সতর্কতায় সংকট দেখিয়ে উপজেলার বাজারগুলোর ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রির প্রতিযোগিতায় মেতেছেন বলে জানা গেছে। বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, উপজেলার হাট-বাজার গুলিতে দোকানীরা গত তিন দিন ধরে ইচ্ছামতো দামে পণ্য বিক্রি করলেও এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করছে না স্থানীয় প্রশাসন।

 

এ ক্ষেত্রে নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করে দায় এড়িয়ে চলছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিরাও। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং এর বদলে দুই চারটা দোকানে গিয়ে জরিমানা আদায় করে মাঠ ছাড়ছেন তারা। উপজেলায় কাগজে পত্রে বাজার মনিটরিং টিম থাকলে মাঠ পর্যায়ে এর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে আরো বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন।

 

জানা যায়, উপজেলার প্রায় ২০টি বাজারের মধ্যে গত দুই দিনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোয়ালাবাজরে থাকা দইি সহ¯্রাধিক মোদির দোকানীদের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছে মাত্র ১৪টিতে। উপজেলার তাজপুর বাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান গুলোর মধ্যে দুইটি দোকানে জরিমানা করেই দায় এড়িয়ে চলছে উপজেলা প্রশাসন। বাজার মনিটরিংয়ের নামে প্রশাসনের এমন অভিযানে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় উপজেলার প্রায় ১৫টি বাজারে ইচ্ছা মতো দামে দ্রব্য বিক্রি করায় অসহায় হয়ে পরেছেন সাধারণ ক্রেতারা। সব চেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে নিন্ম আয়ের মানুষের উপর।

 

সচেতন মহল জানান, বাজার এলাকার প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে হবে। বাজারে দুই দোকানে অভিযানপরিচালনা করে চলে যাওয়ার পর পর বিক্রেতারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা প্রতিযোগিতায় মেতে উঠতে দেখা যায়।

 

শনিবার উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দিয়ে প্রতিটি পাইকারি খুচরা দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। বিক্রি ভালো হওয়ার কারনে কারো সাথে কোনো কথা বলার সময় নেই ব্যবসায়ীদের। প্রাপ্ত তথ্য মতে, উপজেলার গোয়ালাবাজার,তাজপুর, দয়ামীর, কুরুয়া, বুরুঙ্গা,উমরপুর, খাদিমপুর, খন্দকার বাজার, বেগমপুর, কলারাই বাজারসহ উপজেলার প্রায় ছোট বড় প্রায় ২০ টি বাজার ঘুড়ে দেখো গেছে, গত ৫ দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০- ১১০টাকা। সয়াবিন তৈলে প্রতি লিটারে বেড়েছে ১০ টাকা, ডাইল ছোট প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা চিনি কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা,লবন৫-১০ টাকা এর প্রভাব পড়েছে কাঁচা বাজারেও।

 

এসময় বাজারে আসা উমরপুর এলাকার আকমল মিয়া, গোয়ালাবাজারের শুভ দেব, তাজপুর এলাকার শাহ আলম, কলারাই এলাকার ফারুক মিয়া, বুরুঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মকন মিয়া জানান, করোনা ভাইরাস কে পূঁজি করে বিক্রেতারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রশাসন অভিযানে নেমে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী দুই একটি দোকানে অভিযান পরিচালনা করে সেলপি-টেলপি তোলে দায় এড়িয়ে যায়। আরও আমরা সাধারণ মানুষদের বাধ্য হয়ে বেশি দামে দ্রব্য কিনতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন উদাসীনতায় ব্যবসায়ীরা যেভাবে দাম বাড়িয়ে পণ্যে বিক্রির প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন তাতে আমরা নি¤œ আয়ের মানুষরা করোনায় আক্রান্ত না হলেও না খেয়ে মরার উপক্রম হবে।

 

ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলার প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র গোয়ালাবাজারে ১০/১৫ টি প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য বাজারে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করা হবে। করোনা আতঙ্ক দেখিয়ে ব্যবসায়ীরাও যাতে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে না পারে এ ব্যপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। করোনা আতঙ্কে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে এমন ধারণায় সাধারণ ক্রেতারা বেশি পণ্য ক্রয় করে মজুদ রাখার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন ব্যবসায়ীরা এ বিষয়টি  স্বীকার করে তিনি বলেন, বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা হলে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Spread the love

আর্কাইভ

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031