সিলেট ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে। আরেকটু ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। চলমান এক দফা আন্দোলন অক্টোবরে আরও উত্তাল হবে। এই আন্দোলন সফল করতে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনীতিবিদদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক ও গণতন্ত্র মঞ্চের মন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ। সাইফুল হক বলেন, সরকার দেশ চালাতে পারছে না। তারা ডেঙ্গু মশা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই সরকার আলু, পেঁয়াজ, তেল ও ডিম-এই চারটি পণ্যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল।
সেটাও ক্রেতারা ওই দামে কিনতে পারছে না। সরকারকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। সরকারের চেয়ে সিন্ডিকেট বেশি শক্তিশালী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অধিকাংশের ব্যাংকের কোষাগার খালি করে ফেলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওদের ব্যবসায়ী ও মাফিয়ারা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে লোনের নাম করে নির্বাচনের আগে সরিয়ে ফেলছে। বাংলাদেশে এই টাকা থাকছে না। বাংলাদেশের ব্যাংকের টাকা উড়ে ফিলিপাইনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জুয়ার বাজারে। এই সরকারকে একদিনের জন্য মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জোনায়েদ সাকী বলেছেন, ‘এই সরকার রাত ৮টা পর্যন্ত বিচারবিভাগকে ব্যস্ত রেখেছে। তারা নানানভাবে স্বাক্ষীসমর নিয়ে এসে বিএনপি নেতাদের একে একে জেলে পোরার ব্যবস্থা করছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে তো সাজা দিয়েছেনই, এখন মহাসচিব থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সাজা দিয়ে জেলে পুরার ব্যবস্থা করছেন। তিনি আরও বলেন, কেবল বিএনপি নয়; মানবাধিকার সংগঠনগুলোকেও তারা ছাড় দিচ্ছেন না। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে পুলিশের দেওয়া ‘মিথ্যা’ রিপোর্ট অনুযায়ী দুই বছরের সাজা দিয়ে তাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
ভুয়া রিপোর্টের ওপর ভর করে এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করে মানবাধিকার সংগঠকদের জেলে পুরছে। পরিণতি খুব ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই যে মানবাধিকার সংগঠকদের ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রেজুলেসন্স নিচ্ছে। কেবল তারা নিন্দাই করেননি, ইইউ বলেছে, মানবাধিকার পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকতে বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে যে সুবিধা পায়, তার ওপর প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারে গণতন্ত্র মঞ্চের ওপর হামলা হয়েছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের ওপর হামলা করা হয়েছে। দমনপীড়ন মানেই হচ্ছে সরকার ভয় পেয়ে গেছে। তারা সবাইকে ভয় দেখিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা খুঁজছে। সরকার ভয় পেয়েছে মানে এই আরেকটু ধাক্কা দিলেই সরকার পড়ে যাবে। এদের ভয় দেখানোর অস্ত্রটা ভোতা করে দিতে হবে। শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘আগামী জানুয়ারিতে এই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ফের ক্ষমতায় থাকার জন্য এক তরফা নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। আমরা যারা চলমান আন্দোলনে আছি তাদের বাদ দিয়ে এই এক তরফা নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমি গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে বলে দিতে চাই, বাংলার মাটিতে আর কোনো দিন এক তরফা নির্বাচন হবে না। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও এক তরফা নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। গুলি খেয়ে রাস্তায় মারা যাব, তবুও এক তরফা নির্বাচন এই সরকারকে করতে দেব না।’