সুনামগঞ্জে ভালো নেই দিন খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর জীবন যাত্রা

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২০

সুনামগঞ্জে ভালো নেই দিন খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর জীবন যাত্রা

জেলা প্রতিনিধিঃঃ
বর্তমানে বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস। এর কারনে ভালো নেই দিন খেটে খাওয়া মানুস গুলোর জীবন যাত্রা। এ ভাইরাসের প্রতিষেধক না থাকায় প্রতিরোধের উপর জোর দিতে বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে লকডাউন করে মানুষ ঘরে আছে সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার মানুষজন।

 

 

আর এনির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একই সাথে জনসমাগম,দোকানপাট,যানচলাচলও বন্ধ ঘোষণা করার ফলে ঘৃহ বন্দিতে বিপাকে পড়েছেন হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা,দিরাই,শাল্লা,তাহিরপুর,বিশ্বম্ভরপুর,ছাতক,দোয়রা বাজার,জগন্নাথপুর উপজেলাসহ প্রতিটি উপজেলার গ্রামাঞ্চলে খেটে খাওয়া দিন মজুর মানুষ গুলো।

 

 

একদিকে করোনা ভাইরাসের কারনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যেও দাম বাড়ায় খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর একসঙ্গে অনেক কেনার টাকা নেই,আয় নেই আর বাড়তি দাম বাড়াতে তাদের জন্য মারার উপর খরার ঘা হয়ে দাড়িঁয়েছে।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় সড়কে মাঝে মধ্যে রিক্সা,টমটম ও মটর সাইকেল চলাচল করতে।

 

তাহিরপুর বাজারে কথা আলী আহমদ(৫৫)নামে এক রিক্সাচালক চালকের সাথে। তিনি বলেন,পেট-পিঠের তো লকডাউন হয় না। রিক্সা না চালালে খাবো কি বউ-বাচ্চা তো না খেয়ে মরবে। মুখোশ(মাস্ক)আর হাত ধোয়ার ঔষধ আর পেটে দেয়ার মতো খাবার তো কেউ দেয় না। তাহলে কি ভাবে সংসার চলবে। আর বের হয়েও এখন মানুষ পাচ্ছি না। সারা দিনে আগে কম হলেও ৪-৫টাকার বেশী উপার্জন করছে পারতাম এখন ত ১-২শত টাকা উপার্জন করাই কঠিন হয়ে পরেছে। রিকশা চালানো তো আর বন্ধ করে দিতে পারব না। বন্ধ করে দিলে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই এখন যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রখমে চলছি।

 

বাদাঘাট বাজারের টমটম চালক এরশাদ মিয়া,মনিরুল ইসলাম টমটম জানায়-সারাদেশে লকডাউন চললেও সাধারণ অসহায় ও দিনমজুরদের জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও খাদ্যদ্রব্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি। এ অবস্থায় দিনমজুর শ্রেণির লোকেরা করোনা আক্রান্তে আগেই না খেয়ে থাকা মানুষকে ঘরে রাখতে চলছে নানা কার্যক্রম। শুনছি সরকারি কিছু ত্রান দিয়েছে আমরা ত পাই নি।

 

মটর সাইকেল চালক নানু মিয়া জানান,ভাই আগেড় মত এখন তাহির,সুনামগঞ্জ জেলা সদরে যাওয়ার মানুষ পাই না। বড় কষ্টের মাঝে দিন পার করছি।

 

সিএনজি চলক মাসুক মিয়া জানান,এই ভাইরাসের কারনে এখন সিএনজি নিয়ে কোথাও যাওয়া যায় না সব বন্ধ করে দিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ঘরেই বসে আছি। সংসার চলবে কি ভাবে বুজতে পারছি না। কবে এই মরণ ঘাতক ভাইরাসের জামেলা শেষ হবে আল্লাহ ভাল জানেন।

 

 

ঠেলাগাড়ী চালক তাপশ মিয়া,তাজুল ইসলাম,নুর আলম,শুনিল বর্মন,রতিশ দাস,হাসান কবির,নির্মল বলেন,কিছুদিন ধরে করোনা ভাইরাস এর কারনে আগের মত কাজ পাই না। আগে ৫-৬টাকার বেশী উপর্জন গত এখন ইনকাম নাই সংসার চালানো বড় দায় হয়ে পড়েছে। এখন বসে বসে আর ঘুমিয়ে সময় পার করছি এর মধ্যে যদি কারো ডাক পড়ে তাই অপেক্ষায় আছি।

 

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানিয়েছেন,উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের অতিদরিদ্র দিনমজুর কর্মহীন বেকার জনগণের মাঝে চাল,মসুর ডাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলায় ১হাজার পরিবারের মধ্যে এসহায়তা প্রদান করা হবে। শনিবার প্রথম দিন ১৪০টি পরিবারের মধ্যে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার বাকি ইউনিয়নগুলোতে একার্যক্রম চালু হবে।

Spread the love

আর্কাইভ

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728