সিলেট ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, মে ২, ২০২০
প্রতিনিধি/গোলাপগঞ্জঃঃ
সিলেটের গোলাপগঞ্জে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া যুবককে সনাক্ত করা হয়েছে। তার বাড়ি উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউপির কানিশাইল গ্রামে। সে পেশায় নির্মাণ শ্রমিক বলে জানা যায়। তিনি কয়েক দিন আগে সুনামগঞ্জ জেলা থেকে এসেছেন নিজ বাড়িতে। ওই যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনিবার নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য প:প: কর্মকর্তা ডাক্তার মনিসর চৌধুরী।
উপজেলা স্বাস্থ্য প:প: কর্মকর্তা জানান, ২৮ এপ্রিল ওই যুবকসহ ৭০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রেরণ করা হলে শুক্রবার রাতে ওই যুবকের রিপোর্ট আসে পজেটিভ। শনিবার ওই যুবকের বাড়ি উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাসহ লকডাউন করে রাখা হয়েছে এবং ওই যুবককে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি ওই যুবকের বাড়ির অন্যান্য সদস্যসহ ৬ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৭৬জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলায় এক যুবকের করোনা রোগ সনাক্ত করা হয়। গোলাপগঞ্জে এই প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে বলে উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় এদিকে তিনি আরো জানান, গোলাপগঞ্জে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা ঝুঁকিতে রয়েছে। লোকডাউন নিয়মিত না মানা ও সামাজিক দুরত্ব বজায় না রাখলে করোনা রোগীর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জরুরী যানবাহন ব্যাতিত এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলার মানুষজন প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি ছাড়া যাওয়া আসা না করার জন্য নির্দেশ থাকলেও করোনা আক্রান্ত জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন আসায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকেই। পাশাপাশি এভাবে অবাধে করোনা আক্রান্ত এলাকার মানুষজন গোলাপগঞ্জে আসলে এ উপজেলার মানুষজন করোনা ঝুঁকিতে পড়বেন বলে সচেতন মহলের অভিযোগ।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদারকি করে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপসহ বহিরাগতদের উপজেলায় আসা বন্ধ করতে সুদৃষ্টি কামনা করছেন উপজেলার সচেতন মহল। অভিযোগ উঠেছে শত কিলোমিটার দুর থেকে জেলা উপজেলা লকডাউন থাকার পরও করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে মানুষজন কিভাবে গোলাপগঞ্জে অবাধে আসছে সে বিষয় নিয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন উপজেলাবাসী।
অপরদিকে অত্যন্ত গুরুত্¦পূর্ণ উপজেলা সদর পয়েন্ট হচ্ছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদর। ওই সদর দিয়ে জেলার ৪টি উপজেলা ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার মানুষজনসহ পাশ্ববর্তী ভারতের পন্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। গত কয়েদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কোন ট্রাফিক কিংবা থানা পুলিশকে দেখা যায়নি। ফলে প্রতিনিয়ত সকালে মানুষজনসহ যানবাহনের ভীড় দেখা যায় ওই পয়েন্টে। অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদরটি।
উপজেলা সদরে সামাজিক দুরত্বও বজায় রাখছেন না সাধারণ মানুষজন। গোলাপগঞ্জ বাজার চৌমুহনী পুরাতন গরুর হাট রোডে মেসার্স চিশতি এন্টারপ্রাইজের রড সিমেন্টেরঘরসহ একাধিক দোকানপাট লকডাউন ভঙ্গ করে ব্যবসা পরিচালনা করতে দেখা গেছে। গোলাপগঞ্জে প্রথম যুবকের করোনা রোগী সনাক্তের বিষয় নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য প:প: কর্মকর্তা ডাক্তার মনিসর চৌধুরী ও উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শাহিনুর ইসলাম শাহিন।