সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০
পীর হবিবুর রহমানের ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে স্বরণ সভা অনুষ্ঠিত।
লন্ডন থেকে, মুহিব উদ্দিন চৌধুরীঃঃ
উপমহাদেশের বাম আন্দোলনের কিংবদন্তি পুরুষ ছিলেন জননেতা মরহুম পীর হবিবুর রহমান l দেশের গরীব দু:খী মেহনতী মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাদের মধ্যে জননেতা পীর হবিবুর রহমান ছিলেন অন্যতম l তিনি ছিলেন সত্যিকারের গণমানুষের নেতা গরীব দুস্থ ও বিপদগ্রস্ত মানুষের আপনজন এবং বিপদের সহায় l ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার লন্ডনে স্থানীয় একটি হলে পীর হবিব ফাউন্ডেশন ইউকে কর্তৃক আয়োজিত উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ বাম প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি, সাবেক সাংসদ, ভাষাসৈনিক পীর হবিবুর রহমানের ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় উপরোক্ত মন্তব্য করেছেন বক্তারা l
পীর হবিব ফাউন্ডেশন এর সভাপতি আজিজ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহিব উদ্দিন চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ বিলেতে মুক্তিযুদ্ধের প্রবীণ সংগঠক, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ l
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেস মিনিস্টার পীর হবিবুর রহমানের আদর্শের অনুসারী,মুক্তিযুদ্ধা সাংবাদিক আবু মুসা হাসান, চ্যানেল এস টিভির চেয়ারম্যান আহমেদ উস চৌধুরী জেপি, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ,পীর হবিবুর রহমানের আদর্শের অনুসারী যুক্তরাজ্য সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাকিব আহমদ, হিউম্যান রাইটস যুক্তরাজ্যের সভাপতি রাজনীতিবিদ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য উদীচীর সভাপতি হারুনুর রশিদ, পীর হবিব ফাউন্ডেশন ইউকের প্রাক্তন সভাপতি সত্যবাণী সম্পাদক সাংবাদিক সৈয়দ আনাস পাশা l
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুলতান শরীফ বলেন পীর হবিবুর রহমান ছিলেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের রাজনৈতিক অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র l স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখে যখন পীর হবিবের মত রাজনীতিককে মন্ত্রী সভায় নিয়ে আসার আকাঙ্খা শুনতাম, তখনই বুঝতাম তিনি কত বড় মাপের নেতা l প্রবীন এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আওয়ামী মুসলিম লীগ হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পাশাপাশি হেঁটেছেন বঙ্গবন্ধু ও পীর হবিব। পরবর্তীতে ৫৭ সালে বামপন্থিরা ন্যাপ গঠন করে আওয়ামীলীগ থেকে বেড়িয়ে গেলেও পীর হবিবের সাথে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো আমৃত্যু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সংগঠনে জননেতা পীর হবিবুর রহমান ছিলেন অন্যতম শীর্ষ সংগঠক। শোষণ, বঞ্চনা, ধর্মের নামে ভন্ডামী ও সাম্প্রদায়িকতাকে মনে প্রাণে ঘৃনা করতেন তিনি।
বিশেষ অতিথি আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি বলেন পীর হবিব রাজনীতিতে সততার প্রতীক হিসেবে সমাদৃত ছিলেন, এটি আমাদের গর্ব। প্রয়াত এই নেতার স্মৃতি রক্ষায় তিনি ও তাঁর পরিবার সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতায় থাকবে বলে স্মরণ সভায় ঘোষণা দেন চ্যানেল এস চেয়ারম্যান।
সাংবাদিক আবু মুসা হাসান পীর হবিবুর রহমানের সাথে তাঁর রাজনৈতিক সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, মাতৃভূমি ও দেশের মানুষের কল্যাণ ও মঙ্গল সাধনাই ছিলো পীর হবিবুর রহমানের জীবনের ব্রত। পাকিস্তানী অন্ধকার যুগে প্রগতিশীল রাজনীতির ইতিহাসে তিনি ছিলেন এক কিংবদন্তী পুরুষ।
সৈয়দ ফারুক পীর হবিবুর রহমানকে মানব প্রেমিক এক মহান নেতা সম্বোধন করে বলেন, ভিন্ন দলের হলেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সাথে এই নেতার ছিলো ঘনিষ্ট সম্পর্ক। সৈয়দ ফারুক বলেন, আসুন প্রয়াত এইনেতার স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার শেখ হাসিনার চলমান আন্দোলনে আমরা সহযোগিতা করি।
সৈয়দ রকিব বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপদ বসবাসযোগ্য একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজের স্বপ্ন দেখতেন পীর হবিবুর রহমান।
রাজনীতিবিদ আব্দুল আহাদ চৌধুরী পীর হবিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, পীর হবিব রহমান ছিলেন নির্লোভ রাজনীতিবিদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করেছেনl
সমাপনি বক্তব্যে পীর হবিব ফাউন্ডেশনের সভাপতি আজিজ চৌধুরী স্মরণ সভায় উপস্থিত হওয়ায় সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন l
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস l এবং জননেতা মরহুম পীর হবিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয় l
সভায় ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে পীর হবিবুর রহমানের নামে সিলেট অঞ্চলে একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানিয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয় l
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পীর হবিবুর রহমানে ছেলে মন্জুর হোসেন সুলু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা আনসার আহমেদ উল্লা, জামাল আহমেদ খান রাজনীতিবিদ ও সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, দর্পণ সম্পাদক রহমত আলী, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ হোসনেয়ারা মতিন, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা জিএসসি সাউথইস্ট রিজিয়নের সভাপতি আলহাজ ইছবাহ উদ্দিন, রাজনীতিবিদ ময়নুল হক, ফাউন্ডেশন এর সহ-সভাপতি আব্দুল করিম,নিরাপদ সড়ক চাই যুক্তরাজ্যের সভাপতি আবুল হেলাল চৌধুরি সেলিম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ফারুক আহমদ, দয়ামীর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি তহুর আলী এবং সাবেক সভাপতি আবুল কালাম, লালাবাজার ইউনিয়ন এডুকেশন ট্রাস্টের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদিরl
উপস্থিত ছিলেন পীর হবিব ফাউন্ডেশন ইউকের ট্রেজারার শামীম আহমদ শহর ট্রেজারার ইসমাইল হোসেন লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক আখলাকুন নবী চৌধুরী জুয়েল, পীর হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে মোজাফফর হোসেন,চ্যানেল এস প্রতিনিধি রেজাউল করিম মৃধা, ডেইলি স্টার প্রতিনিধি আনসার আহমেদ উল্লাহ, সময় টিভির প্রতিনিধি তানভীর আহমেদ ফ্রীলেন্স রিপোর্টার ফজলুল হক, ফটোগ্রাফার দায়িত্ব পালন করেন এমদাদুর রহমান, মজুমদার আলী l
অনুষ্ঠানশেষে ফাউন্ডেশনএর পক্ষথেকে নৈশভোজেরআয়োজন করাহয়