যুক্তরাজ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক বাংলাদেশী তাহমিনা

প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১

যুক্তরাজ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক বাংলাদেশী তাহমিনা

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক মুসলিম নারী তাহমিনা বেগম। । তিনি যুক্তরাজ্যের পূর্বলন্ডনস্থ ফরেস্ট গেইট সেকেন্ডারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এর মাধ্যমে তেত্রিশ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।তাহমিনা তার দৈনন্দিন রুটিন সম্পর্কে বলেন, খুব ভোরে আমার এলার্ম বেজে ওঠে। আমি সাড়ে ৫টায় বিছানা থেকে উঠি। সকালের নাশতা খেতে খেতে আমি আমার ই-মেইলগুলো দেখি। এরপর গাড়ি চালিয়ে ২০ মিনিটে পৌঁছে যাই স্কুলে।

 

লকডাউনের পর থেকে আমার দিনের কর্মসূচিতে পরিবর্তন এসেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখন বাড়িতে। কিন্তু আমি এখনো প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া পছন্দ করি। রুটিন থেকে ফায়দা পাই, ফায়দা পাই বাড়ি ও কর্ম আলাদা থাকায়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আমি খেলার মাঠে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাবো, তারা যখন স্কুলে আসতে শুরু করবে। আমি সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি।

 

শৈশব থেকেই তিনি শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন জানিয়ে যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান এই শিক্ষক বলেন, আমি সবসময়ই একজন শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। স্কুল আমার কাছে অনেক মজার বিষয়। আমি বিতর্ক ও প্রেস টিমে জড়িত ছিলাম। প্রেস টিম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ ও বন্ধু-বান্ধবদের একটি ভালো গ্রুপ। আমার পরিবার সর্বদা এটাই বিশ্বাস করেছে যে, শিক্ষা একটি মহৎ পেশা। আমি একটি শক্তিশালী কাজের নৈতিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠেছি। আমার কাছে একজন শিক্ষক হওয়া একটি স্বাভাবিক পদক্ষেপের ন্যায়। কারণ আমার বড় ভাই ও বড় বোনও শিক্ষক।

 

মনোবিজ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়েও ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে পেশা শুরু করেন জানিয়ে তাহমিনা বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশেনা করেছিলাম। পূর্বলন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় বেড়ে ওঠি। সেখানকার স্যার জন কাস সেকেন্ডারী স্কুলে (বর্তমানে স্টেপনি অল সেইন্টস্ স্কুল) একজন একাডেমিক টিউটর হিসেবে আমি কাজ শুরু করি। আমি এমন একটি কমিউনিটির সেবা করতে সক্ষম হই, যারা আমার হৃদয়ের অত্যন্ত কাছাকাছি। ছেলেমেয়েরা ছিলো চমৎকার, শিক্ষকরাও ছিলেন মেধাবী। তাই আমিও শিক্ষক হতে আগ্রহী হই। প্রশিক্ষণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেই। স্যার জন কাস স্কুলে শ্যাম উদ্দীন ছিলেন আমার প্রথম মেন্টর, সবচেয়ে বড় সমর্থক ও বন্ধু।

 

পরে শ্যাম ইংরেজীর প্রধান হিসেবে ফরেস্ট গেইট স্কুলে যোগ দেন। আমি সেখানে ইংরেজীর দ্বিতীয় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। দুঃখজনকভাবে ২০১৭ সালে শ্যাম মারা যান। এতে দায়িত্ব এসে পড়ে আমার ওপর। তার অসুস্থতাবস্থায় আমি ইংরেজীর ইনচার্জ হিসেবে সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করি। ২০১৮ সালে আমি ডেপুটি হেড ইনচার্জ অব টিচিং এন্ড লার্নিং নিযুক্ত হই। এরপর ২০১৯ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব লাভ করেন বলে জানান তিনি।

 

এখনও সপ্তাহে একটি ক্লাস নেন তিনি। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তাহমিনা বলেন, এটা করতে আমি অত্যন্ত ভালোবাসি। যে পেশায়ই থাকি না কেনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। ২০২১ সাল একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু হয়েছে। করোনার কারণে আমি স্কুলের বাচ্চাদের গুড মর্নিং বলতে পারছি না, তাদের সঙ্গে করিডোরে গল্পও করতে পারছি না। তারপরও সর্বোত্তম উপায়ে স্কুল পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

Spread the love

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930