অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে প্রেমকান্ত লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে

প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০

অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে প্রেমকান্ত লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

হিংসার আগুনে জ্বলছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। আগুনের লেলিহান শিখা কিছুটা নিভলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখনও পর্যন্ত দিল্লির রাজপথে সহিংসতায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

রাজধানীর সেই আগুনের তেজ যেন ছড়িয়ে পড়ছে নানা দিকে। কিন্তু তারই মাঝে প্রেমকান্ত বাঘেলের মতো মানুষ আছেন, যারা এখনও জীবনের জয়গান গাইতে পারেন মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়েও। জ্বলন্ত দিল্লিতে শান্তির এক পুজারি যেন এই প্রেমকান্ত। মুসলমান প্রতিবেশীদের বাঁচাতে গিয়ে তার শরীরের ৭০% পুড়ে গিয়েছে। তাতেও আক্ষেপ নেই তার। হাসপাতালে গোঙাতে-গোঙাতে বলছেন, ৬ জনকে বাঁচাতে তো পারলাম!

 

শিববিহারের বাসিন্দা প্রেমকান্ত। মঙ্গলবার যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লি পুড়ছে, লাশ পড়ছে চটপট, তখনই প্রেমকান্ত বুঝতে পারেন পরিস্থিতি সুবিধার নয় আর। এরই মধ্যে খবর পান প্রতিবেশী মুসলমানদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি প্রেমকান্ত। ছুটে যান আগুন নেভাতে। কিন্তু পারেননি। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন বাঁচাতে হবে বাড়িতে আটকে পড়া মানুষগুলোকে।

 

জীবনের তোয়াক্কা না করেই এরপর ওই বাড়িতে ঢুকে পড়েন প্রেমকান্ত। একে একে বের করে আনেন ছয়জনকে। যাদের মধ্যে ছিলেন একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধাও। আর প্রতিবেশীদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের শরীরের ৭০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে প্রেমকান্তের।

 

কিন্তু সেই অবস্থাতেও প্রেমকান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি পাওয়া যায়নি। অ্যাম্বুল্যান্সও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু এসে পৌঁছায়নি। সারারাত পোড়া আর যন্ত্রণাবিদ্ধ শরীর নিয়ে পড়ে থাকার পরে সকালে জিটিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে।

 

সেই অবস্থাতেও অবশ্য নিজের বেঁচে থাকা নিয়ে চিন্তিত নন প্রেমকান্ত। তার বারবার তার মুখে শোনা গেছে, তিনি খুশি কারণ ছয়জনের প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন।  এই তো আমার-আপনার-সবার ভারত। প্রেমকান্ত বাঘেল সেই ভারতেরই বীর সন্তান।

Spread the love