’গোল্ডেন’ ভিসা আর দেবে না পর্তুগাল

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২৩

’গোল্ডেন’ ভিসা আর দেবে না পর্তুগাল
Spread the love

৩০ Views

 

“বিনিয়োগ-বান্ধব দেশ” হিসেবে “খ্যাতি” আছে পর্তুগালের

এক দশক আগেও পর্তুগালের অর্থনীতি এতোটা ভালো ছিল না। মূলত বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই গোল্ডেন ভিসার সুযোগটি দিয়েছিল দেশটি। তার কিছুটা সুফলও অবশ্য মিলেছে। কিন্তু বিনিয়োগের কথা বলা হলেও নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কর্মসংস্থান তৈরি না করে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন এবং আশেপাশের এলাকায় বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যাদের বেশিরভাগই হলেন চীনের। তারপরে আছে ব্রাজিলিয়ান, তুর্কি, দক্ষিণ আফ্রিকান এবং রাশিয়ানরা। এই ভিসা সুবিধার মধ্য দিয়ে প্রায় সাত বিলিয়ন ইউরো অর্থ যোগ হয়েছে পর্তুগালের অর্থনীতিতে।

 

 

এই অর্থের ৯০ ভাগ বিনিয়োগ হয়েছে রিয়েল এস্টেট বা আবাসন খাতে। পর্তুগিজ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড বর্ডার সার্ভিসের পরিসংখ্যান বলছে, কর্মসংস্থান তৈরিতে মাত্র ২২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। ফলে, গেল ১০ বছরে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ২৮০ জনের। গোল্ডেন ভিসার মাধ্যমে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে হতাশা জানিয়েছেন পর্তুগিজ অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারস অ্যান্ড ইনভেস্টরস। সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট হুগো সান্তোস ফেরেইরা বলেন, এই সিদ্ধান্ত পর্তুগালে বিনিয়োগে আগ্রহী সব বিদেশিদের ওপর আক্রমণ।

 

 

 

এর মধ্য দিয়ে পর্তুগাল “তার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বিনিয়োগ-বান্ধব দেশ হিসাবে সুনাম হারাবে” বলেও মনে করেন এই আবাসন ব্যবসায়ী। সান্তোস ফেরেইরা বলেন, পর্তুগালের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজন এবং প্রতি বছর ছয়শ মিলিয়ন ইউরো আয় করার এই সুযোগ হাতছাড়া করাও উচিত নয়। গোল্ডেন ভিসার কারণে নির্মাণ এবং আবাসন খাতে হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করেন দেশটির আবাসান ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি সান্তোস ফেরেইরা।

 

আবাসন খাতে আকাশ ছোঁয়া দাম ও ইইউর চাপে পর্তুগালের নতি স্বীকার

গত কয়েক বছরে পর্তুগালের বাসা-বাড়ির আকাশ ছোঁয়া দাম হয়েছে। বিশেষ করে দেশটির প্রধান দুই শহরে লিসবন ও পোর্তোতে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি। সমালোচকরা বলছেন, এর জন্য দায়ী গোল্ডেন ভিসা। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের অনেক নাগরিকও সেখানে বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। ফলে অবস্থা এমন হয়েছে, পর্তুগিজরা এখন নিজ দেশে বাড়ি কেনার অর্থনৈতিক সামর্থ্য হারিয়েছেন। আনা গোমেস বলেন, বাসা-বাড়ির দাম এত বাড়ার জন্য গোল্ডেন ভিসা দায়ী।

 

 

আর এ ঘটনাকে সামনে রেখেই এই ধরনের ভিসা বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণে সুযোগ পেয়েছে সরকার। বাড়ি-ঘরের দাম বেড়ে যাওয়ায় গোল্ডেন ভিসা বন্ধ করার কথা সরকার বললেও এটিকে একটি “অজুহাত” হিসেবে দেখছেন গোমেস। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপের কারণেই পর্তুগালকে এই সিদ্ধান্তে আসতে হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে, রাশিয়ানদের পর্তুগালে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয় এবং গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রাম থেকে বাদ দেওয়া হয়। গোমস বলেন, “চীন এবং ভিয়েতনামের মতো দেশের ধনী নাগরিকরাও গোল্ডেন ভিসার জন্য যোগ্য, তারাও কিন্তু স্বচ্ছতার মডেল নয়।

 

 

তবে এর মধ্যে যারা গোল্ডেন ভিসা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শেঙ্গেন জোনে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি পয়েছেন, তাদের বিষয়ে পর্তুগাল সরকার কী ভাবছে সেটা দেখার বিষয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে যারা স্থায়ীভাবে পর্তুগালে বসবাস করা শুরু করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হতে পারে। কিন্তু যারা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি নিয়েও বসবাস করছে না, তাদের বিষয়ে হয়তো নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

 


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

April 2023
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930