কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে ৩৫০ কোটি ঋণ, খতিয়ে দেখার নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৩

কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে ৩৫০ কোটি ঋণ, খতিয়ে দেখার নির্দেশ হাইকোর্টের
Spread the love

১০ Views

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে এবি ব্যাংকের ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে এ নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। আজ বুধবার এ বিষয়ে দৈনিক আমাদের সময়সহ আরেকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে এই ঋণ অনুমোদেনের অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

 

 

 

 

দুই সপ্তাহের মধ্যে দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণারয়ের সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব, বিএফআইইউ, সিআিইডি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদেশের আগে স্বপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশনার বিরোধিতা করেন আইনজীবী আহসানুল করিম, মাহবুব শফিক ও মইনুল ইসলাম। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজিম। আজ এ বিষয়ে ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ঋণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়,নামসর্বস্ব একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত আমদানিকারক দেখিয়ে ৩৫০ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক। কাগুজে ওই প্রতিষ্ঠানটির নাম ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং লিমিটেড।

 

 

 

বিপুল অঙ্কের এ ঋণের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ঋণের বিপরীতে জামানত দিয়েছে তৃতীয় পক্ষ এবং ঋণের বিপরীতে যে সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়েছে, তার মূল্য দেখানো হয়েছে বাজার মূল্যের চেয়েও ১৬ গুণ বেশি। শুধু তাই নয়, ঋণটির দায় গ্রাহক পরিশোধ না করলে তা এলটিআর ও মেয়াদি ঋণে রূপান্তরের সুযোগও রাখা হয়েছে। তদুপরি ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত লঙ্ঘন করে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৬ কোটি টাকার পারফরম্যান্স গ্যারান্টি ইস্যু করা হয়েছে। এটি নজিরবিহীন। আর এ কাণ্ডে নাটের গুরু ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কর্ণধার আলী হায়দার রতন। এই সেই ব্যক্তি যাকে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে রাত ৮টার পর নগদ ২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় বিষয়টি সংবাদের খোরাক হয়েছিল। দেশের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক তদন্তে আলোচ্য ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী হিসেবে ঠিকাদারি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কর্ণধার রতনের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। তিনি ব্র্যান্ডউইন গ্রুপ অব কোম্পানিজেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

 

 

 

 

সম্প্রতি ব্যাংকটির গুলশান শাখার অনুমোদিত ঋণ প্রস্তাবটির যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনা করে এ জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটন করেছে বিএফআইইউ। বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের নির্বাহী ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদ এবং আলী হায়দার রতনের পারস্পরিক যোগসাজশে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে একটি কাগুজে এবং বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী আলী হায়দার রতন। কেননা আলোচ্য ঋণটির আবেদন থেকে শুরু করে সহায়ক জামানত, পার্সোনাল ও করপোরেট গ্যারান্টি প্রদানসহ যাবতীয় কার্যসম্পাদন করেছেন আলী হায়দার রতন নিজেই।

 

 

 

 

এরই মধ্যে ১৬ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা ভোগও করেছেনতিনি। বিএফআইইউর মতে, বেনামি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ সুবিধার আওতায় ৩৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হলে তা আদায় করা দুরূহ হবে। তাই ঋণের বাকি অর্থের বিতরণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পাশাপাশি ব্যাংকটির কাছে এ ঋণের বিপরীতে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টির বিশদ তদন্ত সাপেক্ষে কাগুজে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত মালিক ও সুবিধাভোগী চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। 6 Shares


Spread the love

Follow us

আর্কাইভ

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930