অ্যাপের ফাঁদে কুয়েতে ১০ হাজার বাংলাদেশি

প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃঃ
ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের কথা বলে বিদেশি অ্যাপ এমটিএফই’র মাধ্যমে ডলার বিনিয়োগ করে সর্বস্ব হারিয়েছেন কুয়েতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অ্যাপটিতে শনিবার ও রোববার লেনদেন বন্ধ থাকে। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে আর্থিক লেনদেন প্রক্রিয়া হঠাৎ বন্ধ হলে গ্রাহকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়।

 

জানা গেছে, এই অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে আর্থিক লেনদেন করতে যেকোনো জায়গা থেকে পরিচিত যে কারও মাধ্যমে এমটিএফই আইডি খুলে সর্বনিম্ন ২৬ ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে সদস্য হওয়া যেত। বিনিয়োগের ওপর এবং নতুন সদস্য যুক্ত করতে পারলে কমিশন দেওয়া হতো। পরিশ্রম ছাড়া প্রতিদিন ডলার আয়ের লোভে পড়ে প্রবাসে নিজের কষ্টের আয়ের টাকা বিনিয়োগ করেন অনেক বাংলাদেশি। বিনিয়োগকারী কুয়েত প্রবাসীরা সব হারিয়ে এখন দিশাহারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক কুয়েত প্রবাসী জানান, কুয়েতে কয়েকজন প্রতিষ্ঠানটির সিইও হয়েছেন। আব্দুর রহমান ও মাসুম বিল্লাহসহ আরও কয়েকজনের অধীনে কুয়েতে ১০ হাজারের মতো বাংলাদেশি এমটিএফইর সদস্য হয়েছেন। তারা সবাই অ্যাপটিতে ডলার বিনিয়োগ করেছেন। ফরওয়ানিয়া, জাহারা ও কুয়েত সিটির মুরগাব এলাকায় তাদের অফিস ছিল। গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা কমিশন পেত। কোম্পানি থেকেও প্রতি মাসে তাদের বেতন ও অফিস খরচ দেওয়া হতো।

 

তিনি আরও জানান, ‌‘লোভে পড়ে ধরা খেয়েছে আমাদের মতো সাধারণ প্রবাসীরা। আমি ওভার টাইম করে যে টাকা পেতাম সেই টাকা এখানে বিনিয়োগ করতাম। কয়েকবার লাভের অংশ তুলতে পারলেও মূলধনটা রয়ে গেছে।

সুজন হাওলাদার নামে আরেক প্রবাসী বলেন, ‘আমি ১৫ দিন আগে টাকা তুলতে মেসেজ দিয়েও টাকা উঠাতে পারিনি। দুই দিন পর দেখি টাকা অ্যাকাউন্টে ফেরত এসেছে। এখন অ্যাপ চালু করে ব্যালেন্সের আগে মাইনাস চিহ্ন দেখছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই টাকা পরিশোধ না করলে আমাদের নামে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে এমন মেসেজ আসছে। টাকাও গেল, উল্টো এখন ভয়ে আছি কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় কি না তা নিয়ে।

 

কাতারে এমটিএফই’র সিইও হওয়া মাসুম উদ্দিন বলেন, ‘চাকরির সুবাদে আমার সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে আমি এমটিএফইতে যুক্ত হই। আমার কোনো লস হয়নি। এই কোম্পানি থেকে আমি অনেক পেয়েছি। গত তিন মাসে আমি নতুন কাউকে সদস্য করিনি। পুরনো যারা ছিল তাদের বেশিরভাগই মূলধন তুলে নিয়েছে। তবে পরবর্তীতে নতুন করে যারা যুক্ত হয়েছে তাদের লস হতে পারে।

 

অনলাইনভিত্তিক অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন হতো বিধায় সদস্যদের কাছে কোম্পানির মালিক বা কোম্পানির বৈধ কোনো কাগজপত্র ও তথ্য নেই। বিনিয়োগকারীদের কাছে লেনদেনের বৈধ কাগজপত্রও নেই যেগুলোর মাধ্যমে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারত। এ অবস্থায় প্রতারকের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কুয়েত প্রবাসীরা তদন্তের মাধ্যমে মূল অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

Spread the love

আর্কাইভ

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30