সিলেট ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
স্টাফ রির্পোটারঃঃ
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি। সিলেটের পর্যটন আর শিল্পায়নের বিকাশের জন্য বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি ছিল । অবশেষে পূরণ হচ্ছে সেই দাবি । আট লেনের সুবিধা রেখে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে এ কাজের টেন্ডার আহবান করা হতে পারে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন করা হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যতে এ সড়কটি আট লেনে উন্নীত করতে চাইছেন বলেও জানান তিনি। এজন্য দুই লেনের জায়গা অতিরিক্ত রাখা হতে পারে। সার্ভিস লেন এমনভাবে করা হবে, যাতে মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত হলে এ লেনকে মূল সড়কে যুক্ত করা যায়। ইতিমধ্যে ১০টি জায়গায় নকশায় পরিবর্তন এসেছে। নতুন নকশায় ১৫টি ওভারপাস ও ফ্লাইওভার এবং ৪টি রেল ওভারপাস থাকবে।
আজ বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উদ্যোগে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় ওঠে আসে এসব তথ্য । সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক নিয়ে এক মতবিনিময় সভা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হয়।
প্রকৌশলীরা আরো জানান, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের জন্য আগে যে চার লেনের নকশা করা হয়েছিল, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ সড়কের রূপসী, বড়পা, পাঁচদোনা, মাধবদীবাজার, ইটাখোলা, মাখন চত্বর, শায়েস্তাগঞ্জসহ ১০টি জায়গায় নকশায় পরিবর্তন এসেছে। আঁকাবাঁকা পথ এড়িয়ে সোজা পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে ২২৬ কিলোমিটার দূরত্ব আছে, কাজ শেষে তা কমে ২১০ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। আগের নকশায় সড়কে ৫টি ওভারপাস ও ৪টি রেল ওভারপাস নির্মাণের কথা ছিল।আঁকাবাঁকা রাস্তা সোজা করায় যানবাহনের গতিও বাড়বে। বর্তমানে ৪০-৬০ কিলোমিটার গতিতে যান চলে এ সড়কে। কাজ শেষে ৮০-১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে যানবাহন। এতে যাতায়াতে সময় প্রায় অর্ধেক বাঁচবে।
সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, আগামী মার্চের মধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের নকশা সংশোধন শেষে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হবে। এরপর জুন-জুলাইয়ের মধ্যে কাজের টেন্ডার আহবান করা হবে। সড়কের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সাল নাগাদ।
বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা দূরত্ব কমানোর দিকে গুরুত্ব দেন, যাতে যাতায়াতে সময় কম লাগে। এছাড়া মহাসড়কের সাথে আশপাশের সড়ক সংযুক্ত করারও পরামর্শ দেন তারা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সাংসদ বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ছয় লেনের মহাসড়কটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল দিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এতে আরো ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে বলে জানান তিনি। তাঁর এ প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলীরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার অভিজ্ঞতা তাদের আছে। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটিকে নিরাপদ মহাসড়ক হিসেবে ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। মহাসড়কে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য বিশেষভাবে সড়ক তৈরি করা হবে। সড়কের পাশে লোকালয়, জেলা ও উপজেলা সদর থাকায় সার্ভিস লেন যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া নকশায় পরিবর্তন আসায় কিছুটা বেশি জায়গা অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে অধিগ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। এছাড়া ৫০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে সড়কটি করা হবে বলেও জানা গেছে।