সিলেট ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০
জয়নাল আবেদীন, মৌলভীবাজারঃঃ
ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৌলভীবাজারের ৩জনসহ পাঁচ বাংলাদেশী নিহত হন। নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ও হাজীপুর ইউনিয়ন এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে। শোকে স্তব্দ নিহত তিনজনের আত্মীয় স্বজনরা বাড়ীতে লাশের অপেক্ষায় সময় পার করছেন।
সরজমিন গেলে দেখা যায়, নিহত লিয়াকত, আলম ও সবুরের বাড়িতে স্বজনদের কান্নায় এলাকা ভারী হয়ে উঠেছে। এলাকার লোকজনও বলছেন এ তিনজনের পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ। ধারদেনা করে পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য ফাঁড়ি জমান প্রবাসে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হবে তাদের । পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী লাশগুলো দেশের আনার ও তাদের পরিবারের সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। কেহ কেহ অন্যের বাড়িতে থাকেন। কেহ সবকিছু হারিয়ে বিদেশে গেছেন। এখন ভিটে মাটিও অবশিষ্ঠ নেই। পিতাকে হারিয়ে ছেলে মেয়ে ও স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছেন স্ত্রীরা। চলছে শাকের মাতম।
নিহতরা হলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিৎলিয়া বাজার টিলা লাইন এলাকার আলম আহমেদ (৩৫) এবং কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সবুর আলী (৩৩) ও হাজীপুর ইউনিয়নের বিলের পার গ্রামের লিয়াকত আলী (৩৫)। দুর্ঘটনার সংবাদ শুনার পর থেকে কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার তিন বাংলাদেশীর পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম।
নিহত আলমের ছেলে আশিক মিয়া জানায়, তারা এক ভাই ও এক বোন। দরিদ্র পরিবারের দুঃখ দুর্দশা ফিরিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাসের জন্য ৫ মাস আগে ওমানে যান তার বাবা। সে খানে কাজ থেকে ফিরার পথে একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় অন্যান্যদের সাথে তিনিও লাশ হলেন। এখন তাদের পুরো পরিবার অন্ধকারে নিমজ্জিত। লাশ ফেরত আসার অপেক্ষায় রয়েছেন এবং এজন্য নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ের সহায়তা চেয়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের নিহত লিয়াকতের স্ত্রী শিরিন বেগম বলেন, পরিবারে একটু সুখের আশায় আমার স্ব^ামী ওমানে যান। এখন তিনি লাশ হয়ে গেলেন। পরিবারের এই শোক কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়। শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের নিহত সবুরের স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, তাদের দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। ভিটেমাটি বিক্রি করে স্বামী সবুর আলী ওমানে যান। পরের ভিটতে বসবাস করছেন তিনি। স্বামীহারা হয়ে এখন অন্ধকার দেখছেন। লাশটি ফেরত আনতে তিনিও সরকারের সহায়তা চেয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলজার আহমদ জানান, লিয়াকত আলীসহ ৪ বছর আগে ওমান দেশে যায়। তার স্ত্রী এক ছেলে রয়েছে। তার মৃত্যুতে তার বাড়ীসহ আমাদের এলাকায় চলছে শোকের মাতম। লিয়াকত আলীর চাচা বিজিবির (অব:) মাসুদুর রহমান জানান, তার স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সের এক সন্তান রয়েছে। কনস্ট্রাকশনের কাজ করে পরিবার চালাতো। পাসপোর্ট নবায়ন করে দু’মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল। তার মৃত্যুর সংবাদে গ্রাম জুড়ে চলছে শোকের মাতম। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত সবার ছোট।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, নিহতের পরিবার সদস্যরা লাশ ফেরৎ আনতে ও আর্থিক সহায়তার মৌখিক আবেদন করেছেন। তিনি শ্রম ওপ্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এমনকি ওমানে বাংলাদেশী দূতাবাসে কথা বলেছেন। পরিবার সদস্যরা লাশ ফেরতের আবেদন করলে লাশ দেশে আনা হবে। তাছাড়া সরকারীভাবে এ পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী জানান, ওমান দূতাবসে কথা হয়েছে। পরিবার থেকে লাশ ফেরৎ চাইলে তা আনার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আর হাজীপুর ও শরীপুরের দুই নিহতের পরিবার খুবই অসহায়। সে জন্য সরকারীভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | |||||
3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 |
10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 |
17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 |
24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 |