গাঁজা না দেয়ায় ওসমানীনগরে খুন হন রিকশা চালক কালু

প্রকাশিত: ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২১

গাঁজা না দেয়ায় ওসমানীনগরে খুন হন রিকশা চালক কালু

প্রতিনিধি/ওসমানীনগরঃঃ
গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে সিলেটের ওসমানীনগরে রিকশা চালক কালু মিয়া খুন হয়েছেন। কালু খুনের ঘটনায় মূল হুতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত হাসান মিয়া মনাই (২৬)। সে মৌলভীবাজারের মীলপুর মাঝপাড়া গ্রামের ইলিয়াছ আলীর পুত্র। গত শুক্রবার মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ঘাতককে গ্রেফতার করা হয়।

 

থানা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাধে সে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জরিত রয়েছে বলে জানিয়েছে। পুলিশ শনিবার আদালতে নিলে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জরিত বলে আদালতকে জানিয়েছে। পরবর্তীতে আদালত তাকে জেল হাজাতে প্রেরণ করেন।

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভাড়ায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে গহরপুর মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে যাবার কথা বলে ঘর থেকে বের হন বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের শিওরখাল গ্রামের মৃত জানু মিয়ার ছেলে রিকশা চালক কালু মিয়া।

 

বালাগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর (গহরপুর) গ্রামের ছহুল আহমদের গরুর খামারের কাজে নিয়োজিত হাসান মিয়া মনাই এক সাথে কালু মিয়ার রিকশা যোগে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর বাজারে উদ্দেশ্যে রওয়া হয়।

 

পথিমধ্যে কালু মিয়া পাঁচপাড়ার পোস্ট অফিসের কাছে আসলে দূর্ঘটনাবশত এক পথচারীর গায়ে রিকশা তুলে দেয়। সেখানেই ঘটে বিপত্তি। পথচারীর গায়ে রিকশা তুলার অপরাধে রিকশাসহ দুইজনকেই আহত ব্যক্তির শ্বশুর বাড়ীতে নিয়া আটকে রাখা হয়।

 

এক পর্যায়ে রিকশা আটকে রেখে চালক ও যাত্রী দুজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। আবারও দুজনে পায়ে হেঁটে তাজপুরের উদ্যেশ্যে রওয়ানা হন। বাজারে পৌছে চালক কালু যাত্রী হাছানকে রেখে আলাদা হয়ে সরু একটি গলি দিয়ে ভিতরে যায়। কিছু সময় পর ফিরে এসে চালক কালু মিয়া গহরপুর মাদ্রাসার উদ্যেশ্যে রওয়ানা হন।

 

তারা দুইজনে পাঁয়ে হেঁটে কার ওয়াশের সামনে আসলে কালু মিয়ার কাছে ২৫০ গ্রাম গাঁজা আছে তা সে সেবন করবে বলে যাত্রী হাসানেক জানায়। এবং সাথে সাথেই কালু মিয়া বলে রাস্তার পাশে বসে গাঁজা খাওয়ার প্রস্থুতি নিচ্ছে। সেখানে ঘটে আরো ঝামেলা যাত্রী হাসান চালক কালু মিয়ার কাছে সেবান করার জন্য কিছু গাঁজা চান। যাত্রীকে গাঁজা দিতে অপাগতা প্রকাশ করেন রিকশা চালক কালু। সেখানেই সব গাঁজা একাই সেবন করে কালু। এ কারণে ক্ষিপ্ত ছিলেন যাত্রী হাসান ।

 

তারপর তারা দুজনে পায়ে হেঁটে দয়ামীরের দিকে রওয়ানা হয়। কালু মিয়া গাঁজার নেশায় ছিলেন আচ্ছন্ন। হাওড়ের রাস্তা দিয়ে দুজনের পায়ে হেঁটে যাত্রা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দয়ামীর ইউনিয়নের চক মন্ডল কাপন চকেরবন্দ পৌছালে কালু মিয়া হুঁচট খেয়ে পড়ে যায়। তখন হাসান কালু মিয়ার কোন নড়াচড়া বা সাড়াশব্দ না পেয়ে কালু মিয়ার পরনে থাকা জ্যাকেট এর ফিতা ধরে কালু মিয়ার গলায় একটি গিট দিয়ে স্বজোরে টান দিতে থাকে।

 

এক পর্যায়ে কালু মিয়াকে ঐ অবস্থায় ফেলে রেখে হাসান পালিয়ে যায়। পরদিন ওই স্থান থেকে রিকশা চালক কালুর লাশ উদ্দার করে পুলিশ।একই দিন খুন হওয়ার চালকের পুত্র কয়েছ আহমদ জাহেদ বাদি হয়ে ওসমানীগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চলে পুলিশের অভিযান।এক পর্যায়ে পুলিমের খাঁচায় ধরা পরে ঘাতক হাসান। থানা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডে জরিত থাকায় কথা শিকার করে। পরে গ্রেফতারকৃত হাসানকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।

 

ওসমানীগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)শ্যামল বনিক বলেন, খুন হওয়া চালকের পুত্র বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ এ খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে সরিসরি জরিত থাকায় হাসানকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

Spread the love

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930