সাপ থেকে চীনের করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি

প্রকাশিত: ২:৫৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২০

সাপ থেকে চীনের করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি
১৭৫ Views

মাসখানেক আগে চীনের উহান নগরী থেকে একটি ‘রহস্যজনক’ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, যার নাম করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২৫ জন মানুষ মারা গেছেন। এ ছাড়াও এটি ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ১ হাজার মানুষের শরীরে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত্রের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এখনো পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা বের করতে পারেননি চিকিৎসকরা। তাই এটিকে প্রতিরোধের ওপরেই সর্বাত্মক জোর দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু কী করে এই রহস্যজনক ভাইরাস মানবদেহে আসে-তা নিয়ে গবেষণা চলছিল। সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে আসে সাপ থেকেই নাকি এই ভাইরাসের উৎপত্তি।

গত ৩১ ডিসেম্বর এই ভাইরাসের বিষয়ে অবগত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরপর থেকেই সতর্কতা জারি করেছে বিভিন্ন দেশে। এমনকি বাংলাদেশের শাহজালাল বিমানবন্দরেও বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয় যাতে এই ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে।

বিবিসির বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, উহান শহরের একটি সি ফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়। অনেক গবেষক বলছেন, সম্ভবত এই ভাইরাসটি সাপ থেকে এসেছে।

বুধবার জর্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজিতে একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, সাপের জিনগত বিশ্লেষণে দেখা যায় সাপের মধ্যেই করোনাভাইরাসটি থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

তবে শুধু প্রাণীর কাছ থেকেই নয় মানুষ থেকে মানুষেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাইরাসটির প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর ধারণা করা হয়েছিল, এটি শুধু প্রাণীর কাছ থেকে ছড়াতে পারে। কিন্তু পরে এই ভাইরাস একজন মানুষের কাছে আরেকজন মানুষের শরীরেও সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তবে এটি কীভাবে মানবদেহ থেকে আরেক মানবদেহে ছড়ায় সেটি এখনো রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে এটি তার পরিবারের সদস্য এবং স্বাস্থ্য-কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উৎপত্তিস্থল উহান শহরে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের বাস। এই শহরটি থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের বড় বড় শহরে বিমান চলাচল করে।

ফলে এখান থেকে ভাইরাসটি বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর একারণেই এই শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের শহর উহান ছাড়াও পাশের আরও একটি নগরীকে কার্যত এখন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই দুটি নগরী থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিশাল এই নগরীর গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যস্ত বাস ও ট্রেন স্টেশন এবং বিমানবন্দরগুলো ছিল ফাঁকা, জনশূন্য।

শহরের লোকজনকে আগেই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শহরে গ্লাভস ও মাস্কের চাহিদা হুট করেই মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।

উহান নগরীর একজন বাসিন্দা বলেছেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এই পৃথিবী বুঝি এখানেই শেষ হয়ে গেল।’

উহান শহরের মেয়র জানান, এই ভাইরাস যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা তারা মোটেই উপলব্ধি করতে পারেননি।

উহান শহরকে এমন এক সময়ে অবরুদ্ধ করা হলো, যখন চীনের নববর্ষ উপলক্ষে কোটি কোটি মানুষ দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ভ্রমণ করছে।

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Follow us

আর্কাইভ

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031