সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
সিলেটে প্রতারক চক্রের অপহরণ নাটকে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবক মহলে। স্কুলে থাকা শিশুদের অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে অভিভাবকদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে চক্রটি আদায় করে নিচ্ছে টাকা।
ফোনের লাইন না কেটে দোকানে গিয়ে বিকাশ করে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হচ্ছে অভিভাবকদের। কিন্তু টাকা পাঠানোর পর খবর নিয়ে জানতে পারছেন তার বাচ্চা দিব্যি স্কুলেই আছে। গত কয়েক মাসে সিলেটে এরকম বেশ কয়েকটি প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। আর জনসচেতনতা ছাড়া এরকম প্রতারণা বন্ধ করা সম্ভব নয়, বলছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তার কাছে ০১৬৪২৯৭৩৫৭২ এই নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোনে জানানো হয় নগরীর সুবিদবাজারস্থ আনন্দনিকেতন স্কুলে প্রথম শ্রেনী পড়ুয়া তার বাচ্চাকে অপহরণ করা হয়েছে। বাচ্চাকে ফিরে পেতে হলে মুক্তিপণ দিতে হবে ৬০ হাজার টাকা। ফোনে ওই কর্মকর্তা তার বাচ্চার সাথে কথা বলতে চাইলে প্রতারকরা একটি বাচ্চার কন্ঠ শোনায়।
শিশুকন্ঠ শুনে বিচলিত হয়ে পড়েন ওই নারী। অপহরণের বিষয়টি অন্য কাউকে জানালে ছেলেকে চিরদিনের জন্য হারাতে হবে এমনটাও শাসিয়ে দেয় প্রতারকরা। ভয়ে প্রতারকদের (কথিত অপহরণকারীদের) কথা মতো টাকা দিতে রাজি হয়ে যান তিনি। পরে সাহস করে তিনি ঘটনাটি জানান তার স্বামীকে। স্বামী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার ছেলে স্কুলেই আছে, ক্লাস করছে। প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে ওই নারী ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেন।
মাস কয়েক আগে একইভাবে এমসি কলেজের এক অধ্যাপকের কাছ থেকে স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে অপহরণের কথা বলে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। ফোনের লাইন কেটে না দিয়ে দোকানে গিয়ে বিকাশ করতে বলা হয়েছিল ওই অধ্যাপককে। পরে তিনি কলেজের পাশর্^বর্তী একটি দোকান থেকে ৫০ হাজার টাকা বিকাশ করেন।
পরে জানতে পারেন তার ছেলে স্কুলেই আছে। শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়। সিলেটে প্রায়ই ঘটছে এরকম প্রতারণার ঘটনা। প্রতারকরা কর্মজীবীদের টার্গেট করেই এরকম প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিলেটে ওই চক্রের কোন সদস্য ধরা পড়েনি।
তবে প্রতারক চক্রের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার জেদান আল মুসা। তিনি জানান, রবিবার সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের একজন নারী কর্মকর্তা তার বাচ্চাকে অপহরণের কথা বলে প্রতারণার চেষ্টার বিষয়টি অবগত করেছেন। যে নাম্বার থেকে ফোন করা হয়েছিল ওই নাম্বার ট্র্যাক করে প্রতারক সনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এভাবে কোন অভিভাবককে ফোন করলে বিচলিত না হয়ে নিকটস্থ থানা পুলিশ বা ‘৯৯৯’ নাম্বারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জনগণের সচেতনতা ছাড়া প্রতারণা বন্ধ করা যাবে না। জনসচেতনতা যতো বাড়বে প্রতারকরা ততোই দুর্বল হবে।