প্রাত্যহিক জীবনে নবীজির ১০ উপদেশ

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২৩

প্রাত্যহিক জীবনে নবীজির ১০ উপদেশ
Spread the love

১৮ Views
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
জাবির ইবনে সুলাইম (রা.) বলেন, আমি এমন এক ব্যক্তিকে দেখেছি, যাঁর কথা সবাই মেনে চলে এবং তিনি যা কিছু বলেন সবাই তা পালন করে। আমি বললাম, তিনি কে? তারা বলল, তিনি হলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। আমি দুইবার বললাম, আলাইকাস সালাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, আলাইকাস সালাম বোলো না, কেননা আলাইকাস সালাম দ্বারা মৃত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া হয়, বরং তুমি বোলো, আসসালামু আলাইকা।

 

বর্ণনাকারী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, আপনি কি আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন, আমি সেই আল্লাহর রাসুল, যাঁকে তুমি বিপদে পড়ে ডাকলে তিনি তোমার বিপদ দূর করেন; দুর্ভিক্ষের সময়ে তাঁকে ডাকলে তিনি তোমার জন্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করেন; ঘাস-পানিহীন মরু প্রান্তরে তোমার বাহন হারিয়ে গেলে তাঁকে ডাকলে তিনি তোমার কাছে তা ফিরিয়ে দেন।

 

বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে আমাকে উপদেশ প্রদানের অনুরোধ জানালাম। তিনি বললেন, তুমি কখনো কাউকে গালি দেবে না। বর্ণনাকারী বলেন, এর পরে আমি কখনো স্বাধীন, গোলাম, উট ও ছাগল কোনো কিছুকেই গালি দিইনি। তিনি (সা.) বলেন, ভালো কাজে অবজ্ঞা প্রদর্শন কোরো না।

 

তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলাটা নিঃসন্দেহে ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত। তোমার কাপড় পায়ের নলার মাঝামাঝি পর্যন্ত উঠিয়ে রাখো, যদি এতে সন্তুষ্ট না হও তবে টাখনু পর্যন্ত রাখো। টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা হতে সাবধান; কারণ তা করা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ অহংকার পছন্দ করেন না।

কেউ যদি তোমার মধ্যকার জানা কোনো দোষ উল্লেখ করে তোমাকে মন্দ কথা বলে এবং লজ্জিত করে তবে তুমি কিন্তু তার জ্ঞাত দোষ উল্লেখ করে তাকে লজ্জা দেবে না। কেননা এর কৃতকর্মের প্রতিফল তাকে ভোগ করতেই হবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪০৮৪) 

নবীজি (সা.)-এর ১০ উপদেশ

হাদিসবিশারদরা বলেন, উল্লিখিত হাদিসে মুমিনের জন্য ১০টি উপদেশ রয়েছে, যা তার প্রাত্যহিক জীবনকে সুন্দর করে। তা হলো :

 

১.  রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য সবার জন্য আবশ্যক। এটা ঈমান ও ইসলাম কবুল হওয়ার শর্ত।

 

২.  সালাম প্রদানে যত্নশীল হওয়া। সালামসহ ইসলামের জিকির ও ইবাদতগুলো কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই পালন করা। যেমন—আজান ও ইকামত।

 

৩.  প্রাত্যহিক জীবনের যেকোনো সংকটে বান্দা আল্লাহকেই স্মরণ করবে, তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করবে। এমনকি সংকট নিরসনের বাহ্যত কোনো উপায়-উপকরণ না দেখলেও।

 

৪.  গালি দেওয়া পাপ ও মন্দ স্বভাব। মুমিন ব্যক্তি কাউকে গালি দেবে না; এমনকি পশুপাখিকেও না।

 

৫.  কোনো পুণ্যের কাজই অবজ্ঞা বা অবহেলার নয়। যত ছোট হোক না কেন সুযোগ পেলে মুমিন ব্যক্তি পুণ্যের কাজে অংশ নেবে।

 

৬.  মুসলমানের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলাও পুণ্যের কাজ। অর্থাৎ মুমিন ব্যক্তি মানুষের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।

 

৭.  ফকিহ আলেমরা বলেন, পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় পরা হারাম।

 

৮.  অহংকার করা, অহংকার প্রকাশ পায় এমন কাজকর্ম, পোশাক-পরিচ্ছদ ও চাল-চলন নিষিদ্ধ। কেননা আল্লাহ অহংকার পছন্দ করেন না।

 

৯.  কারো দোষ প্রকাশ করা নিন্দনীয় কাজ। যদিও লোকটি শত্রু হয় বা তার সঙ্গে বিতর্ক হয়।

 

১০. মন্দের প্রতিবিধানে মন্দ নয়। পাপের প্রতিশোধে পাপ করার অনুমতি ইসলাম দেয় না।


Spread the love