সিলেট ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০
জেলা প্রতিনিধি/সুনামগঞ্জঃঃ
ছাতকের গাবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বিলপাড় গ্রামে সরকারী খাস ভুমিতে নির্মিত দোকান কোটা উচ্ছেদ নিয়ে গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে উত্তেজনা। নির্মিত দোকান কোটা সরকারীভাবে আংশিক ভেঙ্গে ফেলা হলেও দখলদার গোষ্ঠি এখানে আবারো এ ভুমি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উচ্ছেদকৃত ভুমিতে আবারো মার্কেট নির্মাণের নামে সাইবোর্ড ও ব্যানার টানানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে নেতিবাচক প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় এক মাস আগে গ্রামের জামালখালি খালের তীরে সিএনজি ষ্ট্যান্ডের সামনে তিনটি পাকা দোকান কোটা নির্মাণের লক্ষ্যে সরকারী ভুমি দখলের চেষ্টা করে গ্রামের আবু তাহের, জসিম উদ্দিন ও বাবুল মিয়া পক্ষ। খালের উপর অবৈধভাবে মসজিদের উন্নয়নের নামে স্থায়ী দোকান কোটা নির্মাণ করা হলে গ্রামের পানি নিষ্কাশন ও যাতায়াত ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে মর্মে গ্রামবাসীর পক্ষে একটি লিখিত আবেদন সহকারী কমিশনার(ভুমি) বরাবরে দেয়া হয়।
বিলপাড় গ্রামের মৃত আঞ্জব আলীর পুত্র আজম আলী গ্রামবাসীর পক্ষে এ আবেদন করলে বিষয়টি সরজমিন তদন্ত করেন ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা প্রদীপ রঞ্জন দেব। তদন্ত শেষে ২৩ জানুয়ারী সরকারী ভুমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় আইনীব্যবস্থা গ্রহনে সহকারী কমিশনার(ভুমি) বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ রঞ্জন দেব।
এ পেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারী সহকারী কমিশনার(ভুমি) তাপস শীল বিলপাড় গ্রামে সরকারী ভুমি দখল মুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালান। এসময় দখলদার পক্ষ উচ্ছেদ অভিযানে নিয়োজিত শ্রমিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে শ্রমিক ফেরদৌস আহমদ বাবুল(৫০) ও সুমন মিয়া(৩০)কে আহত করে।
স্থানীয় লোকজন জানান, হামলার সময় ভুমি কর্মকর্তা ও পুলিশের লোকজন একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে উচ্ছেদ অভিযান পন্ড হয়ে যায়। খবর পেয়ে ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। পরে নির্মাণার্ধীন দোকান কোটার উপরের অংশের পিলার ভেঙ্গে ফেলে দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শেষ করা হয়। এদিকে সরকারী কাজে বাধা ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
গ্রামের আব্দল মতিন, আবুল মহসিনসহ লোকজন জানান, সরকারী ভুমি দখল নিতে গ্রামের একটি মহল মসজিদকে সাইবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করেছিল। এতে গ্রামবাসীর কোন মতামত ছিল না। সরকারী উচ্ছেদ অভিযানে হামলা ও বাধা প্রদান করে হামলাকারীরা দাপটের সাথে চলাফেরা করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
দোকানদার ইমরান হোসন জানান, মসজিদের উন্নয়নের জন্য দোকান কোটা নির্মাণ কাজ চলছিল। এতে সরকারীভাবে কোন বৈধতা ছিল না বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশিনার(ভুমি) তাপস শীল জানান, সরকারী এ ভুমি থেকে দখলদারদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা হবে। সরকারী কাজে বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধেও আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।