সিলেটে ত্রিশ সদস্যের ডাকাত দল:একে অপরকে চিনতে ব্যবহার করে বিশেষ কোড

প্রকাশিত: ৬:৫৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০

সিলেটে ত্রিশ সদস্যের ডাকাত দল:একে অপরকে চিনতে ব্যবহার করে বিশেষ কোড

অন্তরা চক্রবর্তীঃ

সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৩০ সদস্যের ডাকাত দলের সংগঠন। ওই সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমেই প্রবাসীধ্যাষিত সিলেটের বিভিন্ন গ্রাম ও বাসা বাড়িতে সংগঠিত হচ্ছে চুরি-ডাকাতির ঘটনা। ডাকাত চক্রের এ সংগঠনের সদস্যরা একজন অপর জনকে চেনার জন্য ব্যবহার করে বিশেষ কোড। ডাকাতির মাধ্যমে লন্ঠিত মালামালের একটা অংশ ব্যায় হয় সকল সদস্যদের সার্বিক কল্যানে। অপরাধমূলক ওই সংগঠনটির কোন সদস্য ডাকাতিকালে জনতার হাতে বা পুলিশের হাতে ধরা পড়লে কেউ কোনো প্রকার তথ্য প্রকাশ করবেনা বলে অপরাধ সংগঠন নেতৃত্বদানকারীদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধও রয়েছে সদস্যরা।এছাড়া ওই ডাকাতি সংগঠনের ৩০ সদস্যের কোনো সদস্য গ্রেফতার বা জামেলায় পরলে তার পারিবারিক খরছ সংগঠনের পক্ষ থেকে বহন করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্বিত্বে গুল্লি কামাল নামের এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতারের পর এমন সংগঠন ও ডাকাত দলের সদস্যদের ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

 

গ্রেফতারকৃত গুল্লি কামাল (৪৫) জকিগঞ্জ উপজেলার শাহগলি গ্রামের মৃত আনু মিয়ার পুত্র। সে একাধিক ডাকাতির মামলার পলাতক আসামী বলেও জানায় পুলিশ।এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় কামালের একাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী বাসা বাড়ি রয়েছে বলে নিশ্চিত করে থানা পুলিশ।  বৃহস্পতিবার গুল্লি কামালের বরাত দিয়ে ডাকাত দলের ওই সংগঠনের বিষয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এমন তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

 

পুলিশ জানায়,গত ২৯ জানুয়ারি ওসমানীনগর উপজেলার সিরাজনগর গ্রামে বুরুঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মকদ্দুছ আলীর বাড়িতে ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতদের হামলায় চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও চাচাত ভাই আহত হন। এ ঘটনায় মকদ্দুছ আলীর আত্মীয় রপু মিয়া বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলার সূত্র ধরে ওসমানীনগর থানা পুলিশ বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে ওসমানীনগরের বাংলাবাজার এলাকা অভিযান চালিয়ে আবুল কালাম উরুপে আবুল কাশেম উরুপে গুল্লি কালাম উরুপে গুল্লী কামাল কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার ভিন্ন ভিন্ন নামের বিষয়টি স্বীকার করে ও ৩০ সদস্যের ডাকাত দলের সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টিও প্রকাশ পায়। গ্রেফতারকৃত গুল্লি কামাল ওসমানীনগরের মকদ্দুছ আলীর বাড়িসহ সংগঠিত বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়ায়  বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

 

 

 

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ মোবারক গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,গুল্লি কামাল কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ৩০ সদস্যের ডাকাত দল সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে। ওই দলের নেতৃত্বে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি সংগঠিত হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। ডাকাতির সাথে অনান্য জড়িতদের গ্রেফতার এবং কথিত সংঘঠনটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে।

Spread the love