সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৪৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২০
প্রতিনিধি/লন্ডনঃঃ
বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’-এর উদ্বোধনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২০ উদ্যাপন করেছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারি ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির আমন্ত্রিত অথিতিবৃন্দ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বর্ণীল ফিতা কেটে ও করতালির মাধ্যমে লন্ডন মিশনে এই বিশেষ লাউঞ্জের শুভ উদ্বোধন করেন।
লন্ডন ও আশেপাশের শহরগুলোয় করোনা ভাইরাসের দ্রুত বিস্তারের কারণে ছোট পরিসরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও মুজিব জন্ম শতবার্ষিকীর দিনটি দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-আনন্দের সাথে উদযাপন করা হয়।
‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’-এর উদ্বোধনের পর হাইকমিশনার বলেন, এই লাউঞ্জে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ শিল্পীদের আঁকা বঙ্গবন্ধুর পোট্রেটসহ যুক্তরাজ্রে তাঁর বিভিন্ন সময়ের সফরের ঐতিহাসিক তৈলচিত্র, কমনওয়েলথের ছবি এবং বিভিন্ন স্মরণিকা রাখা হয়েছে, যা মুজিববর্ষব্যাপী ও তার পরেও প্রদর্শন করা হবে। এর মাধ্যমে কূটনৈতিক মহল, বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটি, বিশেষ করে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে আরো ভালো করে জানতে ও বুঝতে পারবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর শুভক্ষণে তিনি যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডের প্রবাসি বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানান। একই সাথে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এ দু‘দেশের প্রবাসি বাংলাদেশি শিশু-কিশোর ও তরুণ সমাজকে অমিত সম্ভাবনাময় নতুন প্রজন্ম হিসেবে উল্লেখ করে তাদেরকে জাতির পিতার মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, অকুতোভয় সাহস এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড এবং তাদের শেকড়ের দেশ বাংলাদের্শে মানুষের কল্যাণে যথাসাধ্য কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, “আজ হতে শতবর্ষ আগে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, বাঙালি জাতিসত্ত্বা বিনির্মাণের অগ্নিপুরুষ ও উপ-মহাদেশের ধর্ম-নিরপেক্ষ রাজনীতির সফল পথিকৃত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম নিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
আমরা আজ দেশে-বিদেশে গর্বিত জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারছি। কিংবদন্তীর এই মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও মূল্যবোধ আজ হতে শতবর্ষ পরেও প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে থাকবে চির ভাস্বর ও অবিনশ্বর। আর তিনি হয়ে থাকবেন আমাদের সকল কাজের অনুপ্রেরণা।
হাইকমিশনার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসি বাংলাদেশিদের সাথে বঙ্গবন্ধুর সুগভীর এবং অবিচ্ছেদ্য প্রাণের সম্পকের্র উল্লেখ করে বলেন, এ জন্যই স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় জাতির পিতা এ যুক্তরাজ্যের মাটিতেই তাঁর প্রথম গৌরবময় পদধুলি ফেলেছিলেন এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশরা আজ গর্বিত দৈত্ব নাগরিক।
হাইকমিশনার বলেন, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করোনা ভাইরাসের হুমকি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ হাই কমিশন বঙ্গবন্ধু প্রেমী যুক্তরাজ্য প্রবাসি বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে মুজিব জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করতে বদ্ধপরিকর।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় নির্দেশনায় বাংলাদেশ হাই কমিশন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদার সাথে বড় পরিসরে উদযাপন করবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারি ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির আমন্ত্রিত অথিতিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান। এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশ শিল্পীরা জাতির পিতাকে নিবেদন করে নতুন করে লেখা গান ও কবিতার সমন্বয়ে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
যা সবার হৃদয় স্পর্শ করে এক অনাবিল আনন্দময় ও আবেগাপ্লুত পরিবেশের সৃষ্টি করে। পরিশেষে হাই কমিশনার দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারি এবং আমন্ত্রিত অথিতিদের নিয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষভাবে সজ্জিত ও “১০০” লেখা একটি কেক কাটেন।
এর আগে সকালে দিবসের শুরুতে হাই কমিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পর জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শহীদ পরিবারের সদস্যদের আত্বার মাগফেরাত কামনা করে করা হয় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত।