সিলেট ২০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫
লন্ডন বাংলা ডেস্ক ::
সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহের পরিচয় শনাক্তের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এই হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এয়ারপোর্ট থানাধীন লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ নামক টিলার ওপর নির্জন ঝোপঝাড়ের মধ্যে এক নারীর আংশিক পচনধরা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরনে ছিল নতুন লাল রঙের ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি রঙের বোরকা ও গলায় হলুদ ওড়না পেঁচানো। পাশে পাওয়া যায় একটি লেডিস ব্যাগ, যার মধ্যে ছিল কিছু জামাকাপড় ও একটি ছোট মেমোরি কার্ড।
পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরে মেমোরি কার্ডে থাকা মোবাইল কথোপকথন ও সিডিআর (কল বিস্তারিত রেকর্ড) বিশ্লেষণ করে পুলিশ নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। নিহত নারী হলেন—সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার মেয়ে রাবেয়া বেগম।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে অগ্রগতি ঘটলে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে রাবেয়ার স্বামী, সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে ফারুক আহমেদকে শনাক্ত করে। এরপর শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দোয়ারাবাজার থানার রাঙ্গারচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ফারুককে গ্রেফতার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের পর ফারুক হত্যার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ওমান অবস্থানকালে স্ত্রীর পূর্বের বিয়ে গোপন করা ও পরকীয়ার কারণে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। গত ১৩ অক্টোবর স্ত্রীকে নিয়ে শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে লাক্কাতুরা টিলায় নিয়ে যায়। সেখানে বিকেল চারটার দিকে ফুফাতো ভাই আলআমিনের সহায়তায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি মিডিয়া, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর নিহতের চাচা রিপন মিয়া বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় ফারুক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) ফারুককে আদালতে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।