সিলেট ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
২০০৮ সালের মন্দার পর ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই আবারো গভীর আর্থিক মন্দা ব্রিটেনে। গত ১১ বছরে অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক উত্থান-পতন, বারবার সরকার বদল, ব্রেক্সিট ইস্যু নানা কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল ব্রিটেনের অর্থনীতি। এবার করোনাভাইরাসের ধাক্কায় আবারও মন্দা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ব্রিটেনে। যার অনেক বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের উপর।আর এ কারণে বিপদের মুখে পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত। একই সাথে এই মন্দার কারণে ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও অর্থনৈতিকচাপের মুখে পড়বে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান এডভাইজার শাহগীর বখত ফারুক বলেন, বর্তমান মন্দা অস্বাভাবিক, অকল্পনীয়। এই মন্দা সমস্ত বিশ্বকে আক্রমণ করবে। এটা সব দেশের সব সেক্টরে প্রভাব ফেলবে। এই মন্দায় কোনো দেশ কোনো দেশের পাশে দাঁড়াতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞ এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমাদের কমিউনিটির মূল ভরসা রেস্টুরেন্ট সেক্টর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এবারের ধাক্কায় এটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বহু মানুষ বেকার হবেন। রেস্টুরেন্ট সেক্টরের সাথে যতো সেক্টর জড়িত সবাই বিপদে পড়বেন।বাংলাদেশ কারি এসোসিয়েশন এর সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী পাশা খন্দকার বলেন, কারি ইন্ডাস্ট্রি ইতিমধ্যেই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে হলে শুধু প্রণোদনা দিলে হবে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে যেসব দাবি জানাচ্ছি সেগুলোর বাস্তবায়ন দরকার। এই শিল্পের মালিকদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রচলিত ফুড ম্যানুর কিছুটা পরিবর্তন এনে সময় উপযোগী করে তুললে তা ক্রেতাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আমার ধারণা। সরকারের উচিত মার্গারেট থ্যাচারের মন্দা পুনুরুদ্ধারের থিওরি ফলো করা।
ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও ফ্রান্স বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি কাজী এনায়েত উল্লাহ ইনু বলেন, ব্রিটেন অর্থনৈতিক মন্দার যে ঘোষণা এসেছে সেটা ইতিবাচকভাবে দেখা যায়। ব্রিটেন সরকার তার দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসা বাঁচানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলোর তুলনা হয় না। একটা সরকার সর্বশেষ অবস্থা হিসেবে মন্দা ঘোষণা করে। ব্রিটিশ সরকার এই ঘোষণার মাধ্যমে সেকেন্ড প্যান্ডামিক সামাল দেয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছে। এই যে ব্রেক্সিট হবে, সেখানে পরবর্তী সময়ে যেসব লেনদেন হবে সেখানে ব্রিটেন বিশেষ সুবিধা পাবে। তাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন টাকার জন্য কোন চাপ দিতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, এই মন্দায় প্রভাব পড়বে সমস্ত ইউরোপে। একই সাথে বাংলাদেশ থেকে যেহেতু অনেক ধরনের পণ্য রপ্তানি হয় ব্রিটেনসহ ইউরোপের বাজারে তাই এই পণ্য রপ্তানিও এক বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। পোশাক–পরিচ্ছদ, হিমায়িত পণ্য, সিরামিক, যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্র ব্রিটেনে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি করতে না পারলে দেশের রপ্তানিখাতগুলো বেকার হয়ে যাবে। তাছাড়া মানুষ এসব দেশের মানুষ কর্মহীন হওয়ার কারণে দেশে রেমিটেন্স পাঠানো কমে যাবে। যা দেশের অর্থনীতিকেও মন্দার দিকে ঠেলে দেবে।বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর দেওয়া তথ্য মতে, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও ইতালিতে গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। আর বিশ্বের শীর্ষ রেমিটেন্স প্রেরণকারী দেশগুলো থেকে বিদায়ী বছরে এক হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।