সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গত দুদিনে সাতজন ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছেন। ইতালি থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই; তাই সংযুক্ত আরব-আমিরাতের দুবাই থেকে ফ্লাই দুবাই ফ্লাইটে তারা চট্টগ্রামে পৌঁছেন।
তাদের সবাই ‘করোনাভাইরাসমুক্ত সনদ’ নিয়েই এসেছেন। এরপরও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোনো লক্ষণ না পেয়ে বিমানবন্দর ছাড়ার অনুমতি দেন বিমানবন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্মরত সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এম জেড এ শরীফ বলেন, গত ৮ মার্চ তিনজন এবং ৯ মার্চ চারজন যাত্রী ইতালি থেকে দুবাই হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছেন। চট্টগ্রামে নামার পর তাদের কাছে দুটি স্বাস্থ্য সনদ ছিল।
একটি হচ্ছে, ইতালি থেকে ফ্লাই করার আগে ‘করোনাভাইরাসমুক্ত সনদ’; সেই সনদ দেখিয়ে তারা দুবাই বিমানবন্দরে নেমেছেন। আরেকটি হচ্ছে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে সরবরাহকৃত ‘হেলথ ডিক্লারেশন ফরমে’ করোনাভাইরাসের লক্ষণ না থাকার ঘোষণা।
তিনি বলেন, সকালে ইতালি থেকে আসা যাত্রীদের আমরা জ্বর ও অন্যান্য লক্ষণ মেপে দেখে কোনো লক্ষণ পাইনি। এরপরও তাদের নাম ঠিকানা যোগাযোগের নাম্বার এবং স্বাস্থ্য সনদের কপি রেখে দিয়েছি। প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য হটলাইন নাম্বারও দিয়ে রেখেছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিমানবন্দর দিয়ে আসা দুই যাত্রীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর গতকাল ৮ মার্চ ছয় দেশের নাগরিকদের বাধ্যতামুলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইনে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দেশগুলো হলো, চীন, দক্ষিন কোরিয়া, ইতালি, ইরান, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড। এসব দেশ থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে কোন ফ্লাইট নেই। মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারত হয়ে ট্রানজিটে চট্টগ্রামে আসার সুযোগ রয়েছে।
ইতালি প্রবাসী হওয়ার পরও তাদের কেন বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইন করা হলো না জানতে চাইলে ডা. এম জেড এ শরীফ বলেন, ওই যাত্রীদের লক্ষণ না থাকার পরও বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইন রাখার সরকারী নির্দেশনা আমরা পাইনি। যদি পাই তাহলে ফৌজদারহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হবে; যেখানে আগে থেকেই ১০টি শয্যা করোনাভাইরাসের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দেশি-বিদেশি ফ্লাইটে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার আর্ন্তজাতিক ও আভ্যন্তরীন যাত্রী চলাচল করে থাকে। এরমধ্যে আর্ন্তজাতিক যাত্রী আছে দেড় হাজারের মতো। ফলে শুধুমাত্র সেই যাত্রীদেরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে চীন থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট আসে না।
তবে চীনের অনেক যাত্রী দুবাই, আবুধাবি, দোহা, মাসকাট ও ভারত হয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছেন। চট্টগ্রাম ঘিরে বড় উন্নয়ন প্রকল্পে বিপুল চীনা নাগরিক কর্মরত থাকায় তারা ওইসব দেশ ট্রানজিট বা উড়োজাহাজ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম পৌঁছেন। ফলে সেসব যাত্রীদের শতভাগ স্বাস্থ্যপরীক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না পর্যাপ্ত লোকবল ও লক্ষন মাপার যন্ত্রপাতি সংকটের কারণে।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ইতালি প্রবাসী যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের অনুমতি কেন দেয়া হলো জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তা কামরুল হাসান কোন মন্তব্য করেননি। তবে একাধিক কর্মকর্তা ইতালি প্রবাসীদের দেশে ঢুকতে তো কোন বিধি নিষেধ নেই।
এরপরও আমরা তাদের কাছ থেকে করোনাভাইরাসমুক্ত সনদ নিয়ে রেখেছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের যাবতীয় তথ্য রেকর্ড করে রাখা এবং সাধারন ডায়েরি করার পরই কেবল দেশে ঢুকার অনুমতি দিয়েছি।
এক ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা বলেন, ইতালিয়ান নাগরিক যদি সরাসরি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ঢুকতে চান; তাহলে তার অন এরাইভাল ভিসা লাগবে। এই মুহুর্তে তাদের অন এরাইভাল ভিসা আমরা দিচ্ছি না। ভিসা দেয়ার আগে তাদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট দুতাবাসের স্বাস্থ্য সনদ দিতে হবে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশি হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্য সনদ দেখছি।