সিলেট ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃঃ
গ্রিসে জাল নথি দিয়ে বৈধতার জন্য আবেদনকারী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়। জাল নথি সন্দেহে এরই মধ্যে অনেকের আবেদন বাতিল হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী জাল নথি দেওয়া অভিবাসী পাঁচ বছরের জন্য গ্রিসে বসবাসে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন। এছাড়াও অবৈধভাবে দেশটিতে বসবাসের কারণে প্রয়োজনে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে।
সূত্র বলছে, এসব জাল নথি তৈরির মূলহোতা হিসেবে দুই বাংলাদেশিসহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, গ্রিসে বর্তমানে অনিয়মিত অভিবাসীরা সাধারণত দুটি প্রক্রিয়ায় বৈধতার জন্য আবেদন করেন। প্রথমটি হচ্ছে ২০১৪ সালের আইনে সাত বছর গ্রিসে বসবাসের প্রমাণপত্র দিয়ে আবেদন। দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি হচ্ছে বাংলাদেশ ও গ্রিসের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির আগে গ্রিসে বসবাস করছেন এমন প্রমাণ দেখাতে পারলেই বৈধতার জন্য আবেদন করা যায়। এছাড়াও প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ডকুমেন্টস।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, গ্রিস কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমানে বিভিন্ন দেশের চার হাজার ভুয়া নথি সংযুক্ত আবেদন রয়েছে। এরই মধ্যে এদের অনেকের আবেদন বাতিল হয়েছে। এ অবস্থায় ভুয়া নথি দিয়ে আবেদনকারীদের ধরতে গ্রিস সরকার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রিস সরকারের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরে ৪৩৪৪৭৬ নম্বর আদেশমূলে তাদের বিরুদ্ধে গ্রিস সরকার আইনগত ব্যবস্থা হিসেবে রেসিডেন্ট পারমিটের আবেদন বাতিলসহ তাকে পাঁচ বছরের জন্য গ্রিসে বসবাসে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করবে।
এছাড়াও অবৈধভাবে গ্রিসে বসবাসের কারণে প্রয়োজনে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে। এ নিয়ে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে। দূতাবাস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই মর্মে সতর্ক করা যাচ্ছে যে, যেসব ব্যক্তি গ্রিসে বসবাস করার জন্য গ্রিস সরকারের আইন অনুযায়ী রেসিডেন্ট পারমিটের জন্য আবেদন করবেন, তারা যদি কোনো জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত ভুয়া রেকর্ডপত্র বা ডকুমেন্টস গ্রিস সরকারের কাছে অনলাইনে বা অফলাইনে উপস্থাপন করেন বা জমাদেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের অতিউৎসাহী হয়ে কোনোভাবে কোনো দালাল বা প্রতারকচক্রের প্ররোচনার দ্বারা প্রতারিত হয়ে কোনো জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত ভুয়া রেকর্ডপত্র বা ডকুমেন্টসের মাধ্যমে রেসিডেন্ট পারমিট পাওয়ার আবেদন না করার জন্য অনুরোধ করা হয়।’
অন্যদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, জাল নথি তৈরি চক্রের সঙ্গে জড়িত চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশি রয়েছেন বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
এ বিষয়ে আলাপকালে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, ‘বৈধতার যে প্রক্রিয়া চলছে, এতে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি যেন কোনো ধরনের জাল নথি যুক্ত না করেন। জাল কাগজপত্র দাখিল করলে, হিতে বিপরিত হতে পারে। পরে তারা আর বৈধ হতে পারবেন না। এমনকি বৈধতার জন্য আবেদনের সুযোগই পাবেন না।’ তাই সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।