সিলেট ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
মেয়েসহ হাজির হতে বাবা মান্নানকে নির্দেশ আদালতের
বুলবুল আহমদ, নবীগঞ্জঃঃ
ঢাকার গাজীপুরের গার্মেন্ট ব্যবসায়ী কোটিপতি বাবা আব্দুল মান্নান সরকারের মেয়ে ইকরা সরকার। সিলেটের যুবকের সাথে প্রেম করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে বিমানযোগে। তাদের রয়েছে গাড়ি ও আলিশান বাড়ি। কোনো কিছুতেই মন টানে না তার। গ্রামের এক সাধারণ যুবকের সাথে পরিচয়ে পরিচিত হয় ঢাকায়।
পরে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের টানে ঢাকা থেকে চারবার বিমানযোগে সিলেট চলে আসে সে। পরে সিলেট থেকে যায় প্রেমিক আমিনুল ইসলাম জনির গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া গ্রামে। বিয়েও করে আমিনুল ইসলাম জনিকে। আমিনুল ইসলাম জনির বাবা ছিলেন একজন ইউপি মেম্বার। বাবার অবর্তমানে পুরো পরিবারের দায়িত্ব তার কাঁধে।
১৯৯৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া ইকরা সরকারের বর্তমান বয়স প্রায় ২০ বছর। এই প্রেম ও বিয়ে মেনে নিতে পারেননি ইকরা সরকারের বাবা আব্দুল মান্নান সরকার। মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে বলে গাজীপুর টঙ্গী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গাজীপুর থেকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নেন আমিনুল ইসলাম জনির বোন জামাই ও চাচাকে। এ খবর পেয়ে তার মেয়ে ইকরা সরকার স্বামীর বাড়ি থেকে গাড়ি যোগে টঙ্গী থানায় যায় ইকরা সরকার। সেখানে গিয়ে পুলিশ ও তার বাবা- মায়ের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ইকরাকে জিম্মি করে তার স্বামীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার জিম্মায় নিয়ে ইকরা সরকারকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।
এক অডিওবার্তায় ইকরা সরকার বলেছেন, তাকে তার বাবা দু’তলায় আটকে রেখে নির্যাতন করছেন। তার স্বামী জনিকে ভুলে যেতে বার বার বলা হচ্ছে। নতুবা স্বামী জনিকে ক্রসফায়ার করে হত্যার ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। বাবার বিন্দশালা থেকে প্রধানমন্ত্রীর হস্তেক্ষেপ কামনা করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছেন ইকরা সরকার।
এ দিকে ইকরাকে উদ্ধারে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম জনির মা রেহেনা আক্তার। হবিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত মামলায় রেহেনা আক্তার পুত্রবধূ ইকরা সরকারকে উদ্ধারের আবেদন জানান। ইকরা সরকারকে সাথে নিয়ে তার বাবা আব্দুল মান্নান সরকার আদালতে হাজির হতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর জনির সাথে ইকরা সরকারের অ্যাফিডেভিট এর মাধ্যমে বিয়ে হয়। পরে ৭ জানুয়ারি তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি কাবিননামা সম্পাদন হয়।
আমিনুল ইসলাম জনির মা রেহেনা আক্তার জানান, আমরা তো ইকরা সরকারকে চিনতাম না। তার বাবাই ইকরাকে পরিচিয় করিয়ে দেয়। সে প্রাপ্তবয়স্ক, নিজ ইচ্ছায় আমার বাসায় এসেছে, আমার ছেলেকেও বিয়ে করেছে। তার বাবা আর্থিকভাবে ধনবান ও কোটিপতি তাহলে কেন তার মেয়েকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। এর দায়ভার কেন আমি স্বামীহারা বিধবা, পিতৃহারা সন্তানরা বহন করব। ইকরার বাবা’র মামলায় আমার ছেলেকে আমি খুজে পাচ্ছিনা। আমি আমার ছেলে জনি ও নববধু ইকরাকে ফিরে পেতে চাই।
এ ব্যাপারে জেলখানায় আটককৃত শামিমুল ইসলামের বাবা দুদু মিয়ার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার নির্দোষ ছেলে ও আমার ভাই রফিক মিয়াকে মান্নান সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় বন্দি রেখেছে। আমি এর বিচার চাই।