সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:০৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিতে গভীর রাতে লন্ডন প্রবাসীর বাগানবাড়ি গিয়ে অবশেষে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো এক তরুণী। নবীগঞ্জের সাহিদা বেগম নামের তরুনী প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় যান পরে পুলিশ ঐ প্রবাসীর বাড়ীর দুতলা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
জানা গেছে, লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটস সিটির সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল চৌধুরীর বড়লেখার বাগান বাড়ির দুতলা থেকে শুক্রবার সাহিদা বেগমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাহিদা বেগম নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নরে রাইয়াপুর গ্রামের রব্বার মিয়ার কন্যা।
সাহিদার পরিবারের অভিযোগ- প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করেছে জয়নাল। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে- জয়নাল ও সাহিদা কোর্ট ম্যারেজ করেই ঘর সংসার করছিলেন। লন্ডন প্রবাসী জয়নালের রিফাত ভিলা নামের আরেকটি চার তলা বাড়ি রয়েছে সিলেট নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগে । দুই তিন মাস পরপর লন্ডন থেকে দেশে এসে সেখানেও তিনি অনেক বান্ধবী নিয়ে থাকতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা পৌরশহরের আল আমিন মার্কেট ও ফাতেমা হাউজের সত্ত্বাধিকারী জয়নাল চৌধুরী একজন ব্রিটিশ নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তিনি লন্ডনে বসবাস করছেন। দেশে আসলে উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের ধর্মদেহী গ্রামের বিলাসবহুল বাড়ি এবং পাশেই পানিশাইল গ্রামে তার নির্মিত অত্যাধুনিক দু’তলা বাগান বাড়িতেও থাকেন। এ বাড়িতে দুজন কেয়ারটেকার স্বপরিবারে বসবাস করে।
মনোরঞ্জন বিশ্বাস নামে পানিসাইল গ্রামের এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সকালে জয়নাল চৌধুরীর বাগান বাড়িতে ঘাঁস কাটতে গিয়ে সদর দরজার ডান পাশের গ্লাস লাগানো রুমে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। তরুণীর রহস্যজনক লাশ দেখে তিনি লোকজনকে জানান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় থানার এসআই শরীফ উদ্দিন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গেইট ও দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে নিয়ে তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে দুতলার পশ্চিম দক্ষিণের বেডরুমে মেঝের উপর চিৎ অবস্থায় এক তরুণীর লাশ দেখেন। রাত ১টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক জানান, লন্ডন প্রবাসীর বাড়ির ভেতর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নারীর গলায় চন্দ্রাকৃতির চিহ্ন (দাগ) রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে লাশটি দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সাহিদা বেগমেরপিতা রব্বান মিয়া জানান- প্রায় ২০/২৫ দিন পূর্বে বড়লেখার জয়নাল চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয় সাহিদার। এক পর্যায়ে তারা প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৭/৮ দিন পূর্বে লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরী সাহিদাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব নিয়ে বাড়িতে আসেন। কিন্তু জয়নাল চৌধুরী বয়স্ক লোক ও একাধীক বিয়ের অধিকারী হওয়ায় তারা এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখানের বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি লন্ডনী জয়নাল। সাহিদাকে কাছে পেতে তৈরী করে নিল নকশা। একপর্যায়ে সাহিদাকে ফুসঁলিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় জয়নাল। এরপর থেকে খোঁজ মিলছিল না সাহিদার। পরে মোবাইল ফোনে সাহিদা তার পরিবারকে জানায় সে জয়নালের বাড়িতে তার সাথেই আছে।