কানাডা ফেরত ছাত্রীর মৃত্যু:পরিবারের দাবি করোনা আক্রান্তের

প্রকাশিত: ১:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২০

কানাডা ফেরত ছাত্রীর মৃত্যু:পরিবারের দাবি করোনা আক্রান্তের

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ

শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল জটিলতায় মৃত্যু হয় নাজমা আমিন (২৪) নামের ওই ছাত্রীর। ঘটনানাটি ঘটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঐ ছাত্রীর পরিবারের দাবি, রোগীর করোনা ভাইরাস ছিল এই সন্দেহ থেকে ডাক্তারা অবহেলায় করায় ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। নাজমা ছিলেন কানাডার সাসকাচোয়ানের রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। তিনি গত সোমবার ঢাকায় ফিরে এসে পেটের ব্যথার কথা পরিবারকে জানান।

 

 

পরিবারের লোকজন জানান, নাজমা মোটেও খেতে পারছিলেন না, প্রতিবার যখন তিনি খাওয়ার চেষ্টা করলেন তখন তার বমি বমি ভাব হয়েছে বা পেটের ভীষণ ব্যথা হয়েছিল। সেই সমস্যা নিয়ে শুক্রবার রাতে তাকে মোহাম্মদপুরের বাড়ির কাছে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) এ রাখা দরকার। এরপর ঢামেকে ভর্তি করা হয়।নাজমার তদারকির দায়িত্বে থাকা সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম জামাল বলেন, ‘যখন জানা গেল মেয়েটি কানাডা থেকে এসেছে তখন ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’ পরিস্থিতি খুব শিগগির স্বাভাবিক হয়ে যায় বলেও তিনি যোগ করেন।ঐ ছাত্রীর বাবা আমিন উল্লাহ বলেন, ‘তাঁর মেয়েকে ঢামেকে একটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে স্যালাইন, অক্সিজেন সহায়তা এবং ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরে সকাল আটটায় নার্সদের শিফট পরিবর্তন হয় এবং নার্সদের একটি নতুন ব্যাচ এসেছিল। সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে এক নার্স আমিনকে জিজ্ঞাসা করলেন নাজমার কী হয়েছে। লক্ষণগুলি বর্ণনা করতে গিয়ে আমিন উল্লেখ করেছিলেন মেয়েটি সম্প্রতি কানাডা থেকে এসেছিল। এই দৃশ্যত সহজ তথ্য নাজমার পরিস্থিতি মারাত্মক করে তুলেছিল। কানাডার কথা উল্লেখ করার সঙ্গে সঙ্গে ওয়ার্ডের নার্সরা চিৎকার করতে লাগল, ‘সে কানাডা থেকে এসেছে! তারও জ্বর হয়েছে’ আমিন উল্লাহ জানান, মেয়েটির করোনা ভাইরাস রয়েছে বলে তারা ডাক্তারদের কাছে ছুটে এসেছিল। তখন পুরো ওয়ার্ডটি বিশৃঙ্খলার কবলে পড়ে এবং ডাক্তার এবং নার্সরা মেয়েটির কাছাকাছি আসতে অস্বীকার করেন। এর ফলে এক পর্যায়ে চিকিৎসার অভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।

 

 

হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয় বলেন, ‘সবাই যখন শুনলো ওয়ার্ডে করোনাভাইরাস রোগী আছে, তখন সবাই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। আমিও সেখানেই ছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল আমার জীবনের শেষ সময় চলে এসেছে। এই রোগীর থেকে যদি আমি সংক্রামিত হই আর আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সংক্রামিত করি তাহলে কী হবে?’ একজন নার্স বলেন, ‘দেখুন, প্রত্যেকের নিজের জীবনের ভয় আছে। সেই ভয় নার্সদেরও আছে।’রাত সাড়ে ১২টার দিকে একজন চিকিৎসক গ্লাভস ও মাস্ক পরে নাজমার কাছে যান। তার হাতে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক ভরা একটি সিরিঞ্জ। ততক্ষণে অনেক দের হয়ে গেছে। অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে পুশ করার কিছুক্ষণ পরই নাজমা মারা যান।ডা. এবিএম জামাল বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি, তার অন্ত্রে ছিদ্র ছিল। অর্থাৎ, তার অন্ত্রের কোথাও ফাটল ছিল। তাকে যখন ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তার শরীর থেকে প্রচুর তরল বের হয়ে গেছে।’

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930