সিলেট ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫
লন্ডন বাংলা ডেস্ক ::
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঘিরে জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে দেওয়া বক্তব্য ইস্যুতে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আমার একটা বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আমাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এটাকে স্বাগত জানাই।’
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানী গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই সনদ সইয়ের দিনে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। তাদের নিয়ে বক্তব্যের জন্য সালাহউদ্দিন আহমদকে ক্ষমা চাওয়ার এই আহ্বান জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে আজ সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপির এই নেতা।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল কী বলেছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায় না? জানা থাকলে বলুন। সবাই বলেছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন চাই। যদি তাই হয়, তাইলে সংশয় থাকবে কেন? পিআর দাবিতে আন্দোলন করছে কিছু দল, এটাই গণতান্ত্রিক চর্চা। এই গণতান্ত্রিক চর্চার জন্যই তো আমরা জীবন দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার একটি বক্তব্য নিয়ে গতকালকে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রেস কনফারেন্সে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য একটা সুনির্দিষ্ট কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বা করার চেষ্টা করেছে। তারা আমার একটা বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আমাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এটাকে স্বাগত জানাই। এভাবেই রাজনৈতিক চর্চা হওয়া উচিত, গণতান্ত্রিক চর্চা হওয়া উচিত। যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে তারা কথাগুলো বলেছেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পূর্বে সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছিলাম, জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের সাথেও কথা বলেছিল, ঐকমত্য কমিশনের সাথেও কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবি পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। কথা বলেছিলাম এবং সেটা ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ সঠিকভাবে অ্যাড্রেস করেছেন। সেটা প্রেসে বলেছেন এবং সংশোধন করেছেন। এরপর তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়।’
তিনি বলেন, ‘যেসব বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি এটা তদন্তনাধীন আছে। দেখা গেছে এখানে জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছু সংখ্যক ছাত্র নামধারী, সেটা ইন্টারভিউতে আমি দেখেছি, কিছু উশৃঙ্খল লোক ঢুকেছে সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী যে এখনো সমস্ত জায়গায় বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সেটা দৃশ্যমান হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘এখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা সঠিক কোনো জুলাই অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না। এটা ছিল আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য। এই কথার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে আমি জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি সংগঠন এবং শক্তিদের সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। যাতে কোনোক্রমে কেউ যেন জুলাই যোদ্ধাদের এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের জন্য অশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত না করতে পারে এবং তাদের সম্মানহানি না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না আমার বক্তব্যে বিকৃত করা হয়েছে। তবে আংশিক বক্তব্যটা কাট করে তারা (এনসিপি) কথা বলেছে বলে আমার মনে হয়। কারণ আমি আমার বক্তব্যের শেষ লাইনে বলেছি যে ওখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা সঠিক কোনো জুলাই অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা ব্যক্তি ওই বিশৃঙ্খল ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে না। জড়িত থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।’
সম্প্রতি দেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমার মনে হয় এ বিষয়ে পরে কথা বলা যাবে। কারণ বিষয়গুলো তদন্তাধীন আছে। সরকারও সম্ভবত একটা তদন্ত টিম করেছে, তাদের ফাইন্ডিংস কী আসে দেখা যাক।’
‘তবে আমার মনে হয়, কিছু কিছু ঘটনা একইসূত্রে গাথা, দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য হয়তো বা এগুলো করে থাকতে পারে কোনো কোনো গোষ্ঠী। তার সঙ্গে হয়তো পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা এবং পতিত ফ্যাসিবাদ জড়িত থাকতে পারে। তবে সেটা তদন্ত করার আগে বলা যাবে না’, যোগ করেন সালাহউদ্দিন।