আগুন নেভাতে ২৬ ঘণ্টা, কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

প্রকাশিত: ৭:৩৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫

আগুন নেভাতে ২৬ ঘণ্টা, কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

লন্ডন বাংলা ডেস্ক ::

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা ভয়াবহ আগুন নেভাতে সাড়ে ২৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে ফায়ার সার্ভিসের। আগুন পুরোপুরি না নেভাতে পারার ৫টি কারণ উল্লেখ করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।

 

 

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কার্গো ভিলেজ এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে কারণগুলো তুলে ধরেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

 

 

তিনি বলেন, ‘প্রথমত, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য বস্তুর আধিক্য (কম্বাসেবল ম্যাটারিয়াল); দ্বিতীয়ত, স্টিল স্ট্রাকচারে তাপ শোষণ; তৃতীয়ত, অপরিষ্কার ও গাদাগাদি পরিবেশ; চতুর্থত, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং পঞ্চমত, ছোট ছোট স্টিলের স্ট্রাকচার কেটে ভেতরে প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয়েছে।’

 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা আর পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগে সাড়ে ২৬ ঘণ্টা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট একযোগে কাজ করেছে।

 

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কার্গো ভিলেজের কাস্টমস হাউসের অংশ এবং এর সামনের অংশগুলোতে অনেক কম্বাসেবল ম্যাটারিয়াল (দাহ্য পদার্থ) ছিল। অর্থাৎ, সেখানে উচ্চমাত্রার দাহ্য বস্তু মজুত ছিল, যার লোড ছিল অনেক বেশি। এই অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থ থাকার কারণেই আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। স্টিলের স্ট্রাকচারের ইস্যুটা অনেক বেশি, এরা অনেক হিট অ্যাবজর্ব (তাপ শোষণ) করেছে এবং এখনো হিট রিলিজ করছে।’

 

তিনি বলেন, ‘এই উচ্চ তাপমাত্রার কারণে আগুন পুরোপুরি নিভতে বিলম্ব হয়। কার্গো কমপ্লেক্সের ভেতরের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত কনজাস্টেড (গাদাগাদি) ও ন্যারো (সরু)। এছাড়া, ভেতরে ছোট ছোট কম্পার্টমেন্ট বা ঘরের মতো করে ভাগ করা ছিল। এর ফলে ফায়ার ফাইটারদের পক্ষে ভেতরে প্রবেশ করা এবং আগুন নেভানোর কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কনফাইনড স্পেস (সীমাবদ্ধ স্থান) ও কম্বাসেবল ম্যাটারিয়াল (দাহ্য পদার্থ) থাকায় বিভিন্ন ফায়ার হুক দিয়ে ধীরে ধীরে এটাকে নির্বাপণ করা হয়েছে। এ জন্য সময় লেগেছে।’

 

 

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কার্গো ভিলেজে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। অ্যাকটিভ (যেমন- ফায়ার অ্যালার্ম, ডিটেকশন সিস্টেম) অথবা প্যাসিভ (যেমন- স্বয়ংক্রিয় প্রটেকশন সিস্টেম বা স্প্রিংকলার) কোনো ধরনের ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেমই সেখানে ছিল না।

 

 

এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিষয় আমরা এখানে পাইনি। যার কারণে আমাদেরও বেগ পেতে হচ্ছে।’

 

 

অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর আছে কিনা- জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের দুজন সদস্য ও আনসার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।’

 

 

আগুনে অবকাঠামোগত ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বেশি তাপমাত্রা থাকার কারণে ভবনটি অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। বেশ কিছু স্থানে ফাটল ধরেছে। কলামেও ফাটল দেখা গেছে। এ বিষয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে জরিপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ভেতরে থাকা ওষুধ ও বিভিন্ন বাই-প্রোডাক্ট থেকে কেমিক্যাল এজেন্ট তৈরি হওয়ায় কিছুটা পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও, মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনের মতো এতটা তেজস্ক্রিয়তা বা বড় ধরনের প্রভাব নেই।’

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

October 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031