রেলের ৫৬ কোটি প্রকল্পের পরামর্শদাতা পকেটে ৪১ কোটিরও বেশি!

প্রকাশিত: ৩:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০

রেলের ৫৬ কোটি প্রকল্পের পরামর্শদাতা পকেটে ৪১ কোটিরও বেশি!

লন্ডন বাংলা ডেস্কঃ

বাংলাদেশ রেল মন্ত্রনালয়ের অধিনে ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত রেলপথ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকা-সাভার-পাটুরিয়া রুটে এই রেলপথ চালু হওয়ার কথা রয়েছে। মূল প্রকল্পের আগে রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাবতা যাচাই ও বিশদ ডিজাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই কাজে মোট ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এর মধ্য থেকে শুধু পরামর্শকদের পকেটেই যাবে ৪১ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।প্রকল্পের আওতায় ফিজিবিলিটি স্টাডি পর্যায়ে ১৮০ জনমাস ও বিশদ নকশা প্রণয়নে ৫৪ জনমাস আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। (একজন ব্যক্তি এক মাসে যে কাজ করতে পারে, তাকে জনমাস বলে।)

 

 

প্রকল্পের আওতায় ৮ জন (৭২ জনমাস) সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, দুটি ফটোকপিয়ার, একটি স্পাইরাল বাইন্ডিং মেশিনসহ আসবাবপত্র কেনা হবে। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।পরামর্শক খাতে অতিরিক্ত ব্যয় প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান (পরিকল্পনা) আ.ন.ম. আজিজুল হক বলেন, মাস্টার পরিকল্পনায় সকল জেলায় রেলপথ যাবে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। মূল প্রকল্প নেয়ার আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হবে। প্রকল্পটি মূলত পরামর্শক বেইজ। প্রকল্পের আওতায় রুটের বিশদ নকশা করা হবে। এই জন্যই পরামর্শক খাতে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। মূলত আমাদের দেশে সেইভাবে এখনো নতুন রেলপথের ডিজাইনার তৈরি হয়নি। প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক পরামর্শকদের দিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। সব কিছু বিবেচনা করেই ব্যয় ধরা হয়েছে।

 

 

জানা গেছে, প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ঢাকার টঙ্গী হতে মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা। পদ্মা রেলসেতু সংযোগ প্রকল্পের সঙ্গে সংযোগ রেখে কেরাণীগঞ্জ হতে নিমতলী পর্যন্ত (মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া) রেললাইন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রস্তুতের পাশাপাশি প্রকল্পের সকল স্থাপনার বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হবে। রেলসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে লাইন পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের প্রস্তাব করা হয়েছে।প্

 

 

রকল্পের আওতায় ২ জনকে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ দেয়া হবে, এদের জন্য ব্যয় হবে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। অফিস স্টেশনারী ৩ লাখ, টেন্ডার দেড় লাখ, সম্মানী ৩ লাখ, পেট্রোল ও জ্বালানি ৫ লাখ, যানবাহন মেরামত খাতে ৩ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কম্পিউটার মেরামতে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্পের আওতায় আইটি খাতে ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ও ভ্যাট বাবদ ৬ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

 

 

 

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের ৪৪টি জেলায় রেলপথ নেটওয়ার্ক আছে। সম্প্রতি সরকার ৩০ বছর মেয়াদি যে রেল মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছে, তাতে অবশিষ্ট জেলায় রেলপথ যাবে। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে প্রতিদিন কমিউটার যাতায়াত করে। কিন্তু শহরে যানজট থাকায় মানুষের কর্মঘণ্টা কমে যাচ্ছে।বর্তমানে ঢাকার সঙ্গে ৪৪টি ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, ময়মনসিংহ, জয়দেবপুর ও নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত। এসব কমিউটার সার্ভিস যাত্রীদের কাছে আকর্ষণীয়। ঢাকার আশপাশে আরও কমিউটার ট্রেন চালু করলে যানজট কমবে। ঢাকার সঙ্গে মানিকগঞ্জের কোনো রেল যোগাযোগ নেই। মানুষজন ঢাকার সাব আরবান মানিকগঞ্জ ও আশপাশের বসবাস করে অফিস করতে পারবে। এ প্রেক্ষাপটেই ঢাকা ও মানিকগঞ্জের মধ্যে রেললাইন নির্মাণের লক্ষ্যে সমীক্ষা করা হচ্ছে।

এলবিএন/১১-এফ/আর/৭৮-০৭

Spread the love

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

আর্কাইভ

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031