সিলেট ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২০
প্রতিনিধি/ মিশিগানঃঃ
করোনার তান্ডবে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ব্যবসায়ী চাল-ডাল-তেল-নুনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিলেও মিশিগানের বাংলাদেশী মালিকানাধীন একটি গ্রোসারি স্টোর থেকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় খাদ্য-সামগ্রি বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য, মিশিগান রাজ্যের গভর্নরও করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না থাকার কারণে এই রাজ্যে জরুরী অবস্থা জারী করেছেন। এরপর বিভিন্ন দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্রের যোগান স্বল্পতা দেখা দেয়। বিভিন্ন গ্রোসারীতে খাদ্য-পণ্যের স্বল্পতা থাকায় প্রবাসী বাঙালিদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এখানকার ওয়ারেন সিটির “দেশী ফ্রুট মার্কেট” এর স্বত্বাধিকারীরগত রোববার ১৫ মার্চ বিকাল ৫.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই ফ্রুট মার্কেটে আগত সকলকে বিনামূল্যে চাল ও তেল প্রদান করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় মানুষজন লাইনে দাড়িয়ে চাল ও তেল সংগ্রহ করছেন। অপর গ্রোসারীগুলোতে দেখা যায়, চাল, ডাল, তেল, পেয়াজ, রসুন, আদা সহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার হ্যান্ড সেনিটাইজার, হ্যান্ড ওয়াস সোপ, টিস্যু পেপার একেবারে নাই বললেই চলে।
একাধিক দোকান মালিকরা জানান, যখনই জরুরী অবস্থার ঘোষণা আসে তখনই আমাদের কমিউনিটি সহ বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষ আসছে অধিক পরিমাণ জিনিষ ক্রয়ের জন্য। আমরাও যথারীতি দেয়ার চেষ্টা করেছি। সেখানেই বাধে আসল বিপত্তি! এ সুযোগে প্রায় সকল গ্রোসারিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রির দাম বাড়ানো হয়েছে। একদিকে করোনা ভাইরাস আতংক, আরেকদিকে হঠাৎ করে মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় স্বল্প আয়ের লোকজন হতভম্ব হয়ে পড়েন। মিশিগান রাজ্যের বিভিন্ন পাইকারী দোকানেও একই অবস্থা। সেই অবস্থা থেকে একটু স্বস্তির জন্য এগিয়ে আসেন সিলেটের গোলাপঞ্জের সন্তান দেশী মার্কেটের মালিক সুমন দে ও শেখর দে। শেখর দে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে চাল ও তেলের সংকট থাকায় আমাদের পক্ষ থেকে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমি আমার দেশের মানুষসহ ভিন্ন কমিউনিটির মানুষদের জন্যেও একটু সহযোড়িতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। জানি না আগামীকাল কি হবে?’ যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে আবারও একই সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
ক্রেতারা জানান, ‘আমরা প্রতিনিয়ত এই গ্রোসারীতে বাজার করতে আসি। কিন্তু আজকে উনারা যে কাজটুকু করেছেন আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। এমন কাজ করাটাও মানবতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা দেশী ফ্্রুট মাকের্টের মালিক ভাইদেরকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই।’স্থানীয় সাংবাদিক আশিক রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার জন্য খুবই ভাল উদ্যোগ। প্রবাসে থাকলেও বিপদে একে অন্যের পাশে থাকাটাও অনেক মহত্মের পরিচয় বহন করে। আমরা আশা করি এই সহযোগীতার পাশাপাশি যদি এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে একটু সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করতে সচেষ্ট হই তাহলে আমরা এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত থাকব।’