দুই টুকরো পাউরুটির মধ্যে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি জনপ্রিয় খাবার স্যান্ডউইচ। মাঝখানের অংশে কখনো থাকে ডিম, মাংস, শাকসবজি কিংবা অন্য কোনো উপাদেয় খাবার। কিন্তু এসব খাবার না হয়ে উপকরণটি যদি হয় ‘গোটা পৃথিবী’, কেমন হয় তাহলে! হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থে তা–ই করে দেখিয়েছেন নিউজিল্যান্ড ও স্পেনের দুই যুবক।
পাগলামোটা প্রথমে চেপেছিল নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের বাসিন্দা এতিয়েন নদের মাথায়। মাস দু-এক আগে এতিয়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে এ–সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিলে অল্প কিছু সাড়া পড়ে তাতে। কিন্তু তিনি খুঁজছিলেন অকল্যান্ডের হুবহু উল্টো স্থানের কাছাকাছি বাস করে, এমন কাউকে। অবশেষে সাড়া মেলে স্পেনের যুবক এনজেল সিয়েরার।
এতিয়েন ‘টানেল টু দ্য আদার সাইড অব দ্য আর্থ’ নামের অনলাইন অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণায়ক যন্ত্র ব্যবহার করে নিশ্চিত করেন বরাবর বিপরীত স্থানটিকে। এরপর দুজন পৃথিবীর দুই প্রান্তে পাউরুটির দুই টুকরো রাখেন। ফলে পৃথিবীর ১২ হাজার ৭২৪ কিলোমিটার অংশ চাপা পড়ে টুকরো দুটির মাঝখানে। তাঁদের দুজনের মাঝখানে ভৌগোলিক দূরত্ব দাঁড়ায় ২০ হাজার কিলোমিটার। স্যান্ডউইচের নির্মাণশৈলী অনুযায়ী এটিই হয়ে ওঠে ‘আর্থ স্যান্ডউইচ’।
কাজটিকে ঠিক যতটা সহজ মনে হচ্ছে, আদতে মোটেই তা ছিল না। যেমন এতিয়েন নদে বলেন, পুরো বিষয়টি বন্দোবস্ত করা বেশ কঠিনই ছিল। ১২ ঘণ্টা সময়ের পার্থক্যের জটিলতা ছাড়াও অন্য অনেক প্রস্তুতির ব্যাপার ছিল। নির্দিষ্ট প্রতিপাদ (ভূপৃষ্ঠের বিপরীত দিকে অবস্থিত) স্থান নির্বাচন, কী রকমের রুটি ব্যবহার করা হবে কিংবা বিপরীত পাশ থেকে যিনি রুটির খণ্ড স্থাপন করবেন, তাঁর সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগ স্থাপন—সব মিলিয়ে ঠিক অতটা সহজ ছিল না।
তবে কাজটি বেশ উপভোগ্য এবং মানুষের সম্মিলিত কাজের একটি সুন্দর উদাহরণ—এ রকমই মনে করেন নদের আহ্বানে সাড়া দেওয়া স্পেনের এনজেল সিয়েরা। সিয়েরা বলছিলেন, পৃথিবীর বিপরীত দুই প্রান্ত থেকে মানুষ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, এটি তারই একটি নিদর্শন।
গোটা পৃথিবীকে স্যান্ডউইচ বানিয়ে ফেলার এই অদ্ভুতুড়ে ভাবনাটির মূল কারিগর কিন্তু মার্কিন চিত্রশিল্পী জে ফ্রাঙ্ক। ২০০৬ সালে তিনি বানিয়েছিলেন ‘পৃথিবী স্যান্ডউইচ’। মজার ব্যাপার হলো, তিনিও বেছে নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড ও স্পেনকে।
এলবিএন/২৬-জ/(এস-আলো)৭০/০৩