সিলেট ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২০
লন্ডন বাংলা ডেস্কঃঃ
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে জীবিকার তাগিদে বসবাস করেন প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি। এর মধ্যে অবৈধের তালিকায় পড়েছেন ১ লাখের বেশি। অবৈধ হলেও কাজ করছিলেন তারা। কিন্তু চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস তাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে।হাতে কাজ নেই, তাই খাওয়াও নেই। যেখানে থাকতেন, সেখানেও মিলছে না মাথা গোজার ঠাঁই। সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীরা। তাদের অভিযোগ, এই দুর্দিনে তাদের পাশে নেই বাংলাদেশ দূতাবাস।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণের জন্য অবসহায় প্রবাসীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ হলেও তারা কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। এমন অভিযোগও তুলেছেন প্রবাসীরা। প্রবাসীদের যোগযোগের জন্য ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি নম্বর (৯২১২৮১৯৮) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটিতে কল করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না তারা। প্রবাসীরা বলছেন, ওই নম্বরে কল করে ত্রাণের বিষয়ে জানতে চাইলে টিটু নামে একজন বলছেন, ‘দূতাবাস থেকে ত্রাণ দেওয়া হয় না।
যে সকল প্রবাসী বিপদে আছেন, তাদের তালিকা করে কিছু অনুদান দিয়েছে ওমান-বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব। তবে বিপদে থাকা প্রবাসীদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, তারা ক্লাবের অনুদান পাননি।
এ বিষয়ে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট সিরাজুল হক আমাদের সময়কে বলেন, ‘ওমানে বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ, আট লাখ প্রবাসীর মাঝে হাতে গোনা হয়তো ৫ শতাংশ প্রবাসী সচ্ছল আছেন। বাকি সবাই কোনো না কোনোভাবে খাদ্য সঙ্কটে আছেন। এই অবস্থায় ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা ১ হাজার জনকে একমাসের খাবার দিতে পেরেছি। এ ছাড়া ব্যক্তিগকভাবে আরও ২০০ জনকে অনুদান দিতে পেরেছি। কিন্তু প্রয়োজন তো লাখের বেশি।
সিরাজুল হক আরও বলেন, ‘ওমানে শুধুমাত্র শ্রমিকরাই খাদ্য সঙ্কটে আছে ব্যাপারটা এমন নয়। অনেক ব্যবসায়ী এখন খাদ্য সঙ্কটে। আগের পরিস্থিতি থেকে বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। প্রায় লাখের মতো বাংলাদেশি প্রবাসী এখন খাদ্য সঙ্কটে ভুগছেন।’ এ সময় দূতাবাস থেকে সহায়তা না দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘দূতাবাস থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা আমাদের সময়কে বলেন, ‘ওমানের অসহায় প্রবাসীদের জন্য সরকারি বাজেট দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই অসহায় প্রবাসীদের হাতে অনুদান পৌঁছে দেওয়া হবে।’ দূতাবাস নিয়ে প্রবাসীদের অভিযোগের বিষয়ে সচিব বলেন, ‘অভিযোগ থাকতেই পারে। আমার অফিসিয়াল মেইলে অভিযোগ পাঠাতে বলেন।
ওমানে অসহায় প্রবাসীদের জন্য পাঠানো সরকারি ত্রাণ দূতাবাসে পৌঁছেছে কি না, এ বিষয়ে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সরওয়ার আমাদের সময়কে বলেন, ‘কিছু কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে ত্রাণ পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। বিভিন্ন শহরে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে অসহায় বাংলাদেশিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে। ওমানে করোনা পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো থেকে কিছুটা উন্নত। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮৪ জন, মারা গেছেন ৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১০৯ জন।